নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে গত ২৩ জুলাই প্রকাশ্য দিবালোকে বিউটি আক্তার (২৫) কে তার ভাসুর হাবিবুল্লাহর ছেলে ইউনুস (২৩) ও ইউনুসের মা জলেকা (৪৫) দেশীয় অস্ত্র রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ রক্তাক্ত করে এবং কোমর থেকে মেরুদণ্ড পর্যন্ত কুপিয়ে মারাত্মক কাটা জখম করে, ফলে মলদ্বারের নালী কেটে যায় ।
উল্লেখ্য যে, পূর্বের একটি ধর্ষণ মামলায় (আড়াইহাজার থানা মামলা নং ৩৩ (৪) ২০২৩) একমাত্র আসামি ইউনুস গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন হাজতবাস করিবার পর ১৭ মে ২০২৩ তারিখে জামিন নিয়ে বাড়িতে এসে বাদীকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য ভয়-ভীতি দেখাতে থাকে। এই বিষয়ে থানাকে অবহিত করিয়া বিউটি আক্তার আরেকটি সাধারণ ডায়েরি করে।
সাধারণ ডায়েরির ঘটনা শুনে ইউনুছ আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে ভয়-ভীতি দেখাতে থাকে এবং জীবনের নিরাপত্তার জন্য বিউটি আক্তার ইউনুছের ভয়ে বাবার বাড়ি কান্দাপাড়ায় চলে আসে । গত ১৯ জুলাই ধর্ষণ মামলার আসামি ইউনুস স্থায়ী জামিন নিয়ে বাড়িতে এসে আবার বিউটি আক্তারের বাড়িতে হামলা চালায় এবং ঘরের তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে জিনিসপত্র ভাঙচুর করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে।
এ খবর শুনে বিউটি আক্তার বাবার বাড়ি থেকে ইসলামপুর গ্রামে স্বামীর বাড়িতে এসে প্রতিবাদ করলে ইউনুসের মা জলেকা বিউটির শরীরে থাকা ওড়না গলায় ফাঁস লাগিয়ে মাটিতে শুয়ে ফেলে এবং বলতে থাকে ইউনুস ঘর থেকে রামদাটা এনে একে হত্যা কর। মায়ের কথামতো ইউনুস ঘর থেকে রামদা এনে বিউটি আক্তারকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
বিউটি আক্তারের আর্ত চিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন এসে মুমূর্ষ এবং রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জখমের গুরুত্ব দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। ঢাকা মেডিকেল হসপিটালের কর্তব্যরত চিকিৎসক যুগান্তরকে জানান রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।
মলদ্বারের নালী কেটে ফেলা হয়েছে ফলে কৃত্রিম উপায়ে মলত্যাগের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে একটি অপারেশন হলেও আরেকটি অপারেশন করতে হবে এখনও রোগীর সম্পর্কে তেমন ভালো কিছু বলা যাচ্ছে না। বিউটি আক্তারের স্বামী প্রবাসী হওয়ার কারণে তার বড় ভাই হাসান আলী আড়াইহাজার থানায় ২৪ জুলাই বিকেলে দুজনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল ইসলাম তৈয়ব বলেন এটা অত্যন্ত নেককারজনক ঘটনা ভাসুরের ছেলে ইউনুস ধর্ষণ মামলয় স্থায়ী জামিনে এসে চাচীকে (ধর্ষণ মামলার বাদী) হত্যার চেষ্টায় কুপিয়ে জখম করেছে। আসামিরা পলাতক রয়েছে আমরা তাদেরকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি।