রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান আক্তারের ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে সোচ্চার হয়ে উঠেছে দেওপাড়া ইউনিয়ন ইউপির বাসিন্দাগণ।

জানা গেছে, স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীর সার্বিক সহায়তায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতিক নিয়ে আক্তার ৩ বার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অথচ সরকার দলীয় চেয়ারম্যান হয়েও তিনি ১৫ বছরে তেমন কোন দৃশ্যমান উন্নয়নই করতে পারেননি। তবে ইউনিয়নবাসীর জীবন-মানোন্নয়ন ঘটাতে না পারলেও তার নিজের উন্নয়নের কোন কমতি নেই, এই সময়ের মধ্য তিনি হয়েছেন অঢেল বিত্ত-বৈভবের মালিক।

তৃণমুলের অভিযোগ, দল, নেতা ও নেতৃত্বের সঙ্গে বেঈমানী করে আকতার এমপি বিরোধীতার নামে দলের নেতাকর্মীদের মধ্য বিভ্রান্তি ও দলীয়কোন্দল সৃষ্টি, জাতীয় সংসদ, জেলা পরিষদ ও উপজেলা নির্বাচনে নৌকার মনোনিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করা, বিগত সংসদ নির্বাচনে নিহত আওয়ামী লীগ কর্মীর হত্যাকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ঘটনা ধাঁমাচাপা দেবার চেস্টা করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেছে। এমনকি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম-শতবার্ষিকী মুজিববর্ষ-২০১, জাতীয় জেল হত্যা দিবস, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ইত্যাদি জাতীয় ও দলীয় অনুষ্ঠান তো তিনি করেননি বরং নানা কৌশলে বাঁধা দিয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এদিকে এসব বিষয় বিবেচনা করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এমন ব্যক্তিকে যেনো নৌকা প্রতিক দেয়া না হয় সেটা বিবেচনা করতে আওয়ামী লীগের তৃণমুল দলের নীতিনির্ধারক মহলের কাছে আবেদন করেছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

স্থানীয়রা এসব কারণে আকতারকে উন্নয়নের প্রতিবন্ধক বা দেওপাড়ার দৈত্য বলে অবিহিত করেছে।
সরেজমিনে দেওপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ১৫ বছর আগে এই ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট, বাজার-হাট যে তিমিরে ছিল, সেখানেই রয়ে গেছে।গ্রামের মোড়ে মোড়ে নেই সোলার লাইটের ব্যবস্থা, নেই বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, নেই পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যার ফলে বর্ষা মৌসুমে ইউপির অধিকাংশ এলাকা হয়ে থাকে জলমগ্ন। দেওপাড়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বয়োজৈষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান কি উন্নয়ন করেছে তা এবার ভোটের সময় তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তারা বলেন, যে পাড়ার নামে ইউনিয়ন সেই পাড়াতে ১৫ বছরে একটি সোলার লাইট দিতে পারেনি সে আবার জনগণের কি উন্নয়ন করবে, এবার ভোট চাইতে এলে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউপি সদস্য বলেন,আওয়ামী লীগ সরকার দেশের প্রতিটি এলাকায় দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছে, অথচ আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হয়েও আকতার লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতি করে এলাকাকে উন্নয়ন বঞ্চিত করেছে আমরা তার রাহুগ্রাস থেকে বাঁচতে পরিত্রাণ চাই। অন্যদিকে ১৫ বছর ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত দেওপাড়া ইউনিয়নবাসীর কাছে উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা নিয়ে দেবদ্রত হয়ে মাঠে নেমেছেন গোদাগাড়ী উপজেলা যুবলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সোহেল। পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজ, প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী, বিশিস্ট সমাজ সেবক, আদর্শিক ও তরুন নেতৃত্ব হিসেবে তিনি সকলের হৃদয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়ে পচ্ছন্দের শীর্ষে রয়েছেন। বিশেষ করে করোনা দুর্যোগে স্থানীয় সাংসদের আহবানে বেলাল ইউপির প্রায় ৮ হাজার কর্মহীন পরিবারকে খাবার সরবরাহ করার পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বিভিন্ন মসজিদে মাদরাসা-এতিমখানা, মন্দীর-গীর্জা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা করে চলেছেন, যা ইউপিবাসীর মনে তার আলাদা জায়গা করে নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *