আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল আংশিক) আসনের উপনির্বাচনে ১৪–দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন আলী জামানত হারিয়েছেন। তাঁর এমন পরাজয়ের পেছনে জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগের ওপর অনেক বেশি ভরসা, নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অসহযোগিতা ও আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে ফাটল—এই তিন বিষয় কাজ করেছে বলে মনে করছেন ভোটার ও স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।

বিএনপির সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমানের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া এই আসনে ১ ফ্রেরুয়ারী বুধবার ভোট হয়। নির্বাচনে ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন আলী (হাতুড়ি), জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজউদ্দীন আহম্মেদ (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শাফি আল আসাদ (আম), বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টির সিরাজুল ইসলাম (টেলিভিশন), জাকের পার্টির এমদাদুল হক (গোলাপ ফুল) ও স্বতন্ত্র হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোপাল চন্দ্র রায় (একতারা) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাফিজউদ্দীন আহমেদ ৮৪ হাজার ৪৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোপাল চন্দ্র রায় (স্বতন্ত্র) পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩০৯টি ভোট।

এই উপনির্বাচনে জামানত হারিয়েছেন চারজন প্রার্থী। জামানত হারানো প্রার্থীদের তালিকায় আছেন ১৪ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী ইয়াসিন আলী তিনি হাতুড়ি প্রতীকে ১১ হাজার ২৫৬, জাকের পার্টির প্রার্থী এমদাদুল হক গোলাপ ফুল প্রতীকে ২ হাজার ২৫৭, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী সাফী আল আসাদ আম প্রতীকে ৯৫৩ এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল পার্টির প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম টেলিভিশন প্রতীকে ১ হাজার ৩৮২টি ভোট পেয়েছেন। সর্বনিম্ন ভোট পেয়ে আইন অনুযায়ী জামানত হারিয়েছেন তারা।

বুধবার রাতে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও ঠাকুরগাঁও ৩ আসনের রিটার্নিং
রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহাতাবউদ্দিন বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে রাণীশংকৈল নির্বাচন কর্মকর্তা নূর-ই-আলম বলেন, ‘সংসদ নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীকে ২৫ হাজার টাকা করে জামানত রাখতে হয়। আইন অনুযায়ী মোট বৈধ ভোটের আট ভাগের এক ভাগের কম ভোট পেলে ওই প্রার্থীর জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হয়।’

ঠাকুরগাঁও ৩ আসনের উপনির্বাচনে ১১৮টি কেন্দ্রে ৩ লক্ষ ২৪ হাজার ৭৪১ জন ভোটার ছিলেন। কিন্তু ভোট পড়েছে মাত্র ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৩৩৪ টি। সেই হিসাবে ভোট কাস্ট হয়েছে শতকরা ৪৬ দশমিক ২৯ ভাগ, যা মোট ভোটের তুলনায় খুবই নগণ্য।

জামানত হারানো এসব প্রার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে প্রতিবেদক। বেশির ভাগই এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। অনেকে ফোনই ধরেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *