ইন্দ্রজিৎ টিকাদার
বটিয়াঘাটা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ
খুলনার বটিয়াঘাটায় সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বটিয়াঘাটা উপজেলা।এ উপজেলায় প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার জন্য রয়েছে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
কিন্তু সেবা না পেয়ে অনেকেই ফিরে যান মহানগরী খুলনার বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০১৪ সালের দিকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনও কাগুজে – কলমে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতালটি।সুন্দরবন উপকূলবর্তী নদীনালা বেষ্টিত এ উপজেলার স্বল্প আয়ের মানুষ এখানে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। পরিবেশ না থাকার কারন দেখিয়ে চিকিৎসকরা স্থায়ীভাবে আবাসিক কোয়ার্টারে থাকেন না।
ডিউটি ভাগাভাগি করে হাসপাতালের কাজ চালান বাইরে বসবাস করে।এখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও সপ্তাহের নির্দিষ্ট সময়ে তা করা হয়।এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও ড্রাইভার না থাকায় মূমূর্ষ রোগীর জন্য পরিসেবা নেই। যে কারনে চিকিৎসা নিতে সহসা কেউ আসতে চান না।
৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও ২০ জনের বেশি রোগী কখনো ভর্তি দৃশ্যমান হয় না বলে অভিযোগ স্হানীয়দের।দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও শিশু,ইএনটি,অর্থো, কার্ডিও,চক্ষু, চর্ম ও যৌন,সহকারী সার্জন,মেডিকেল অফিসার ( সমমান),ইনডোর মেডিকেল অফিসার, ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার, প্যাথলজিষ্ট,এনেসথেটিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতো গুরুত্বপূর্ন পদগুলি কর্তৃপক্ষ আজও মন্জুরী করন করেননি। আয়ুর্বেদিক মেডিকেল অফিসার পদটিও দীর্ঘদিন যাবত শূণ্য।হাসপাতালটিতে সর্বমোট ১৭১ জন জনবলের বিপরীতে গুরুত্বপূর্ণ ৪৫ টি পদ দীর্ঘদিন যাবত শূণ্য রয়েছে।
প্রথম শ্রেনীর মর্যাদার মন্জুরী হওয়া সতেরোটি পদের বিপরীতে জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারীর মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি রয়েছে অনেক দিন ধরে ফাঁকা।তৃতীয় শ্রেণীর ১০২ জন জনবলের মধ্যে রয়েছে ৭৫ জন। ২৭ টি পদ দীর্ঘদিন যাবত শূণ্য।এর মধ্যে স্বাস্হ্য সহকারী ৪০টি পদের বিপরীতে ২০ টি পদ,সহকারী নার্স ১ টি,ল্যাবরেটরী টেকনোলজিস্ট ১ টি,পরিসংখ্যানবিদ ১টি,স্টোর কিপার,অফিস সহকারী ২টি পদ দীর্ঘদিন যাবত শূণ্য। চতুর্থ শ্রেণির ২১ টি পদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন। ১৭ টি পদ আজও শূণ্য। ৫ জনের বিপরীতে সুইপার মাত্র ১ জন। যে কারনে বাথরুম -টয়লেটের অবস্থা চরম শোচনীয়। ওয়ার্ড বয় তিনটি পদের মধ্যে শূণ্য রয়েছে ৩টি।অফিস সহায়ক ৬টি পদের বিপরীতে রয়েছে মাত্র ১ জন। ৫ টি পদই শূন্য।
সিকিউরিটি গার্ড ২ টি পদের বিপরীতে রয়েছে ১ জন। ২ জনের মধ্যে কুক রয়েছে ১ জন।চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান,ডাক্তাররা মহানগরী খুলনা থেকে সকাল ১০ টার দিকে এলেও দুপুরের পর পর চলে গেলে একমাত্র রোষ্টার ডিউটিরত একজন ডাক্তার ও নার্সরাই হলো তাদের একমাত্র ভরসা।মুমূর্ষু কোন রুগী এলেই তাদের কাছ থেকে রেফার্ড নিয়ে সদর,মেডিকেল কলেজ অথবা ব্যক্তিগত চিকিৎসায় যেতে হয়। এমনকি সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও জাতীয় পতাকা তোলার মতো লোক পর্যন্তও থাকে না।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান জানান,স্বাস্থ্য সেবার মান জনবল স্বল্পতার কারনে কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।তবে আমরা বসে থাকি না। সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি।জনবল চেয়ে উধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।