মোঃ রনি মিয়া জগন্নাথপুর প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন অফিস এখন ঘুষ দুর্নীতিতে ওপেন-সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভোটার তালিকায় নাম উঠানো, সংশোধন ও স্থান পরিবর্তনসহ নানা কাজে ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। এসব কাজ পড়ে থাকে মাসের পর মাস।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এ উপজেলার হাজারও ভুক্তভোগী।
এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
সেবা প্রার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুর নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী নাজির মিয়া সরকারি সকল নিয়মকে উপেক্ষা করে নিজের মত ঘুষ দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ঘুষ ছাড়া কোনো কাজে হাত দেয় না।
যেখানে অনলাইন এনআইডি তালিকায় ১১৫ টাকা নির্ধারন করা থাকলেও সেখানে নিচ্ছেন ২৩০ টাকা ও কারো কাছ থেকে ৩০০ টাকা।
ভোটার স্থানান্তরে সরকারি কোনো ফি না থাকলেও ৩০০ ও ৫০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
আর এনআইডি কার্ডে কোনো প্রকার ভুল সংশোধন করতে হলে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা দিতে হয় তাকে ।
তবে অনলাইন কপি আনতে গেলে সেই অফিস সহকারী ২৩০ টাকা নিলেও আবার শিখিয়ে দিচ্ছেন কেউ জানতে চাইলে বলবেন ১৪০ টাকা ।
এভাবে উপজেলার সেবা প্রার্থীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির স্বীকার হচ্ছে।
তবে অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে গেলে যেখানে ব্যাংক স্লীপ নিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে নগদ টাকায় করিয়ে দেন এই অফিস সহকারী।
এতে সরকার অনেক রাজস্ব হারাচ্ছে বলে অনেকেই জানান।
এদিকে গত ২০ সেপ্টেম্বর ভুক্তভুগী আশরাফুল রহমান সুমন ( খোকন) নামের একজন নির্বাচন অফিসের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে জানা যায়, ভোটার আইডি কার্ড করণের লক্ষে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সহ নির্বাচন অফিসে গেলে কর্মরত নাজির নামের একজন তার কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করে বলেন আপনার ভোট তুলতে ৫ হাজার টাকা করছ যাবে, খোকন অসহায় হয়ে তাকে আনয় বিনয় করার পরও সে টাকা ছাড়া কাজ করতে পারবেনা বলে জানায়।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার একাধিক ভুক্তভোগীরা বলেন টাকা ছাড়া এখানে কোনো প্রকার সেবা দেয়া হচ্ছেনা। তারা আরও বলেন এনআইডি’র অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে গেলে সে ২৩০ টাকা করে নিয়েছে। তারা একটু কম দিতে চাইলেও দিতে পারেন নি। কোনো ব্যক্তি তার জাতীয় পরিচয় পত্রের সামান্য ভুলের সংশোধনের জন্য গেলেও অফিস সহকারী বলে দিচ্ছেন ৬ মাস লাগবে, তার আগে হবে না। এভাবেই ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের।
অভিযুক্ত নাজির মিয়া বলেন, যে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তাকে আমি অফিসে আসতে দেখেছি। ভোট তোলার বিষয়ে কোন কিছু বলেনি,এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সে কিছুদিন আগে আমাকে বলছিল তার স্ত্রীর বয়স বাড়িয়ে ভোট তুলে দেয়ার জন্য ,আমি তার কথায় রাজি হয়নি।
এই বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মুজিবুর রহমান বলেন নতুন কেউ ভোট তুললে কোন টাকা লাগেনা, নাজির তো ভোট তুলেতে পারেনা, সে কিভাবে টাকা দাবি করবে, যদি খোকনের কাছে টাকা দাবি করে তাহলে খোকন আমার কাছে বলতে পারতো, উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন কেউ ২৩০ টাকার মধ্যে খুশি হয়ে ৫০ টাকা বেশি দিয়ে যায়, আমিও অনেক সময় দেখি অভিযোগকারীরা ইচ্ছা করে টাকা বেশি দিয়ে যায়।