মৃণাল চৌধুরী সৈকত, টঙ্গী :
টঙ্গীতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে স্বস্ত্রীক এক পুলিশ সদস্যকে মারধর করার দায়ে সিটি কর্পোরেশনের ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ এর ছেলে সিফাতকে (২০) আটক করে পুলিশ। আটকের পর ঘটনাটি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয় মন্তব্য করে পুলিশ এক ঘন্টার মধ্যে তাকে ছেড়েও দিয়েছে বলে জানা গেছে । রোববার টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনালে হাসপাতালে এ ঘটনাটি ঘটে।
হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২ টার দিকে গাছা থানার পুলিশ কনস্টেবল রিপন তার স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে আসে। তারা ৩ তলার টিকাদান কেন্দ্রের সামনে গেলে মুছাই করা ফ্লোরে হাটতে মানা করেন হাসপাতালের পরিছন্নকর্মী । এ নিয়ে কনস্টেবলের স্ত্রীর তর্কাতর্কি হয়। এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য রিপন জিজ্ঞাসা করলে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কোভিড ১৯ টিকাদান কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবক সাদিয়া, সাথে কথা কাউন্সিলরের স্ত্রী শিউলী বেগম, ছেলে সিফাত তর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং এক পর্যায়ে কনস্টেবল রিপন ও তার স্ত্রীর উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধর করে গুরুতর আহত করে। উপায়ন্ত না পেয়ে রিপন পুলিশকে ফোন দিলে টঙ্গী পূর্ব থানার এসআই জুলহাস উদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌছে সিফাতকে আটক করেন। আহতদের উদ্ধার করে একই হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের রুমে বসে উভয় পক্ষের কথা শুনেন। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নেয়ার আগেই অভিযুক্ত সিফাতকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে কাউন্সিলর পরিবারের ৫/৭ জন সদস্য হাসপাতালে অস্থায়ী এবং রেড ক্রিসেন্ট এর স্বেচ্ছা সেবক হওয়ার সুবাধে গত কয়েক দিনে হাসপাতালটিকে নিজের ভূ-সম্পত্তি মনে করে সাধারন রোগীদের সাথে অসদাচরণ করে থাকে বলে হাসপাতালের পুরোনো সেবকদের অনেকে মন্তব্য করেন । এ ঘটনায় স্থানীয় থানা পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহন না করে আটককৃতকে ছেড়ে দেয়ায় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পুলিশ সদস্য রিপন বলেন, আমি আমার অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালটির তৃতীয় তলায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসি। পরীক্ষার শেষে রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এ সময় হাসপাতালটির পরিচ্ছন্নকর্মী আমাদের জুতা খুলে বারান্দায় দাড়াতে বলে। জুতা না খুলে দাড়িয়ে থাকায় তিনি আমাদের অকথ্য ভাষায গালিগালাজ করতে থাকলে আমি আমার পরিচয় দেই।পরিচয় পেয়ে পাশে থাকা রেড ক্রিসেন্টর কয়েকজন সেচ্ছাসেবক ও কাউন্সিলের স্ত্রী ,শ্যালিকা ও ছেলে আমাদের মারধর করে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৪৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক আহম্মেদ বলেন,এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি। বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে ।
টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাষ্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি আমাদের পরিচ্ছন্নকর্মী নন। তার নাম পরিচয় আমার জানা নেই।
এবিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদ মাসুদকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিব করেননি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার অপরাধ(দক্ষিণ) ইলতুৎ মিশ বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এটি এতোটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। ভুল বুঝা বুঝি মাত্র। তাই বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *