আনোয়ার হোসেন আকাশ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি :

ঠাকুরগাঁওয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আজ শুক্রবার চার ব্যক্তি মারা গেছেন। এই দিন ৪৬টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ২১ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন মাহফুজার রহমান সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, গত মে মাসে ৩৩০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। শনাক্তের হার ছিল ৭–এর কিছুটা ওপরে। কিন্তু চলতি জুন মাসে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।
গত ১১ দিনে ৬১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২২৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ সময়ে জেলায় ১৩ জন করোনা রোগী মারা গেছেন।

বিশেষ করে ৭ জুন থেকে প্রতিদিনই করোনা শনাক্তের রেকর্ড ভেঙেছে। ৭ জুন ৮৮টি নমুনা পরীক্ষা ফলাফলে ২২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ। ৮ জুন ১০৬টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে শনাক্ত হয় ৩০ জন, শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। ৯ জুন ১১৩টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৩৯ জন করোনা শনাক্ত হয়। এদিন করোনা শনাক্তের হার ছিল ৩৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর গতকাল বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার কিছুটা কমলেও শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। এই দিন ১৩০টি নমুনা পরীক্ষা ফলাফলে ৪৩ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। এটি এই বছর এক দিনে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত।

তবে শুক্রবার শনাক্তের সংখ্যা কমলেও বেড়েছে শনাক্তের হার। এই দিনে ৪৬টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২১ জনের। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা শনাক্তের হার ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। সদর উপজেলায় ৯ জন, বালিয়াডাঙ্গীতে ১০ জন, রানীশংকৈলে ২ জন করোনায় সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে চারজন মারা গেছেন। মৃত ব্যক্তিরা সদর, বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল ও হরিপুর উপজেলার বাসিন্দা।
জেলায় এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৪৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৯১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ পর্যন্ত (১১ জুন) করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪৯ জন।

করোনা সংক্রমণের আশঙ্কার মধ্যেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় সদর উপজেলায় লোকজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় লোকজনের চলাচল বন্ধ করতে পাহারা জোরদার করা হয়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের সিভিল সার্জন মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, শহর-গ্রামাঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। করোনার সংক্রামণ প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থবিধি মানার বিকল্প নেই। তবু মানুষ সচেতন হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে চলাচল করার কারণেই সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, মানুষকে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করায় প্রশাসন মাঠে আছে। এরপরও শনাক্তের হার না কমলে, বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *