71bangladesh

আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

সাইনবোর্ডে নামের আগে পদবি দেয়া আছে ডাক্তার। নিয়মিত দেখছেন রুগী। প্রেসক্রিপশন লিখে দিচ্ছেনও ওষুধ।
আবার সেই ওষুধ কিনতে হবে সেই ডাক্তারের নিজ দোকান থেকে। যদিও তার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত।

এভাবেই প্রতিনিয়ত গ্রাহকের সাথে প্রতারণা করে আসছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেহন বাজারের নুরুজ্জামান বাবুল ওরফে বাবুল।

সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে একটি ওষুধের দোকানের সাথেই ডাক্তার চেম্বারের পাশে ঝুলানো একটি সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা, ডাক্তার নুরুজ্জামান বাবুল, ডিএমএফ ঢাকা, মেডিসিন চিকিৎসক। প্রতিদিন সকাল ৮ টা হতে দুপুর ২ টা পপর্যন্ত ও ৩ টা থেকে রাত ৮ পপর্যন্ত রোগী দেখা হয়। এবং এসব বলে এলাকায় চলছে মাইকিং। তবে এই ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে এলাকাবাসী।

বাবুলের কাছে চিকিৎসা নেয়া ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক নামে একজন জানান, আমার প্রচুর জ্বর হয়েছিলো। আমি তার কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তিনি আমাকে কিছু হাই এন্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে দেয়। তবে আমার এক পরিচিত বড়ভাই ওষুধগুলো দেখেই খেতে বারণ করেন এবং আমাকে অন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সেই ডাক্তারের দেয়া প্যারাসিটামল খেয়ে আমি সুস্থ হই।

আরেক ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন বলেন, আমি মাথাব্যথার কথা জানিয়ে তার কাছে ওষুধের পরামর্শ চাই। তিনি অনেকগুলা ওষুধ লিখে দেয়। তবে সুস্থতার বদলে আমি আরো অসুস্থ হয়ে পরি। পরে শহরের এক মেডিসিন ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। সেই ডাক্তার পূর্বের খাওয়া সব ওষুধ ভুল ছিলো জানায়।

ওই এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফুর জানান, বাবুল আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। আমরা জানি ও প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পার হয়নি। তাই আমরা তার কাছে চিকিৎসা নেইনা। তবে অনেকে অজান্তে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত । চিকিৎসার মত এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাবধান থাকা উচিত। দ্রুুত এই ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে যেকোন বড় বিপদ হতে পারে।

এই বিষয়ে কথা হয় ডাক্তার পরিচয়দাতা বাবুলের সাথে। ডাক্তারি পড়ালেখা বা কোন প্রকার প্রশিক্ষণের কাগজ দেখতে চাইলে, নেই বলে অকপটে স্বীকার করেন বাবুল। সেই সাথে চেম্বারের পাশে থাকা ওষুধের দোকানের লাইসেন্সও নেই বলে স্বীকার করেন তিনি। তিনি বলেন, যেখানে ব্যানার করছি সেখানে তারা ভুল করে ডাক্তার লিখে ফেলছে। তাছাড়া এই এলাকার আশেপাশে কোন ডাক্তারও নেই। তাই আমি যা চিকিৎসা দিচ্ছি তাতে মানুষের উপকার হচ্ছে।

এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, চিকিৎসার মত স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো সমঝোতার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানা ছিলোনা। দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *