ইউসুফ আলী প্রধানঃ
নারায়ণগঞ্জে ব্যাঙ্গেও ছাতার মত বেড়ে উঠা স্টেুরেন্ট গুলো ভোক্তা অধিকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা। নিজেদের খেয়াল-খুশিতে তৈরি করা উচ্চ দামের ফুড মেন্যুতে জিম্মি করছেন ভোক্তাদের।
বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট অফারের নামে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে প্রতারণা করছেন সোস্যাল মিডিয়ায় লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের দৃষ্টি আর্কষণ করে। টার্গেটকৃত গ্রাহকরা বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পরে রেষ্টুরেন্ট গুলোতে খাবার অর্ডার করেন, তবে খাবার মুখে দেয়ার পর বুঝতে পারেন এর তিক্ততা ।
এ ধরণের আচরণের ক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর সেকশন ৪৪ এ বলা হয়েছে “ কোন ব্যক্তি কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদন্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
তবে নিম্ন মানের সেসব খাবার এর বিষয়ে কথা বলতে চাইলে গ্রাহকদের সাথে করা হয় অশোভন আচরণ । এ ক্ষেত্রেও ভোক্তা অধিকার আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। আইনের সেকশন ৫২ তে উল্ল্যেখ করা হয়েছে “ কোন ব্যক্তি, কোন আইন বা বিধির অধীন নির্ধারিত বিধি-নিষেধ অমান্য করিয়া সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হইতে পারে এমন কোন কার্য করিলে, তিনি অনূর্ধ্ব তিন বৎসর কারাদন্ড, বা অনধিক দুই লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
এছাড়াও রেস্টুরেন্ট গুলো খাবার অর্ডারের ক্ষেত্রে (হিডেন রুলস) অপ্রকাশিত কিছু নিয়ম চালু রেখেছেন। সেসব নিয়মের মধ্যে উল্লেখ থাকে কোন খাবার অর্ডার করলে সাথে অন্যান্ন খাবারের কোন আইটেমটি অর্ডার করবেন। খাবারের মেন্যুতে হিডেন রুলস এর বিষয়ে ভোক্তা অধিকার আইনের সেকশন ৩৮ এ বলা হয়েছে ,“কোন ব্যক্তি কোন আইন বা বিধি দ্বারা আরোপিত বাধ্যবাধকতা অমান্য করিয়া তাহার দোকান বা প্রতিষ্ঠানের সহজে দৃশ্যমান কোন স্থানে পণ্যের মূল্যের তালিকা লটকাইয়া প্রদর্শন না করিয়া থাকিলে তিনি অনূর্ধ্ব এক বৎসর কারাদন্ড, বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।”
কোমল পানীয় বিক্রির ক্ষেত্রে প্রতারণার সংখ্যা অনেক বেশি।
এ ক্ষেত্রে রেস্টুরেন্ট গুলো খোলা বাজার থেকে কোকা-কোলা, সেভেন আপ, ফান্টা বা স্প্রাইট এর কয়েক লিটার পরিমাণের বোতল মজুদ রেখে ক্রেতাকে
সেসব বোতল থেকে কোমল পানীয় গ্লাসের মাধ্যমে পরিবেশন করা হয়। তাতে মূল্য কারচুপির অনেক সুযোগ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া শহিদ মিনার-বালুর মাঠ রোডে অবস্থিত ফুড গেজেট রেস্টুরেন্ট এর একজন ক্রেতা মো: শান্ত বলেন , এই রেস্টুরেন্ট এ হিডেন কিছু রুলস রেখেছে, যেমন আমি এই রেস্টুরেন্ট এ মাঝে মধ্যেই এসে খাবার অর্ডার করি। তাদের কাছে শুধুমাত্র পানি, স্প্রাইট বা এ ধরণের ভেবারেজ পণ্য অর্ডার করার নিয়ম নেই তবে অন্যান্ন খাবারের সাথে এসব অর্ডার করা যেতে পারে।
এছাড়াও চিট-চ্যাট রেস্টুরেন্ট এর একজন ভুক্তভোগী ইউসুফ আলী বলেন, এখানে অন্যান্ন খাবারের সঙ্গে কোমল পানী অর্ডার করা হলে খোলা গ্লাসে করে তা পরিবেশন করা হয়। এতে তারা দাম ও পরিমাণের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন।
শুধুমাত্র এ দুটি রেস্টুন্টেই নয় শহরের কলেজ রোডের টেম্পু, সাম্পান, চিটচ্যাট, শহিদ মিনার বালুর মাঠ রোডের ফুড গ্যাজেট, ক্রাশ স্টেশন সহ অসংখ্য রেস্টুরেন্ট । এ ছাড়াও শহরের আনাচে কানাচে থাকা আদি ফুড ল্যান্ড, ফুডল্যান্ড, সুগন্ধা বেকারী সহ অসংখ্য বেকারী গ্রাহকদের মানি রিসিপ্ট না দিয়ে প্রতারণা করছেন।
এসব বিষয়ে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিচালক সেলিমুজ্জামান বলেন, আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। এসব রেস্টুরেন্ট গুলোর বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সালে ইসা লিসবেক নামের এক মার্কিন নারীর শরীরে ম্যাকডোনাল্ডসের ৫০ সেন্টের কফি পড়ে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে ছয় লাখ ডলার! শুধু স্বাভাবিক তাপমাত্রা থেকে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কফি দেওয়ার অভিযোগে