মোঃ রাশেদুল হক
এডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টঃ
গত ৪ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ এর শীতলক্ষ্যা নদীতে যে ঘটনা ঘটেছে তা দুর্ঘটনা নয়, নিশ্চিত হত্যাকান্ড। নারায়ণগঞ্জ থেকে ৩০ মিনিট দূরত্বের নৌপথে মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার পথে সলিল সমাধি হয়েছে ৩৫ টি তাজা প্রাণ ! এটি কোন দূর্ঘটনা নয় হত্যাকাণ্ড! এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বিআইডব্লিউটিএ, নৌ-পুলিশ প্রশাসন, বেপরোয়া লাইটার জাহাজের মালিক- নাবিক সবাই দায়ী।
ঠিক যে যায়গায় দূর্ঘটনা ঘটেছে সেই যায়গায় নির্মানাধীণ সেতুর দুই পিলারের মধ্যবর্তী জায়গা খুবই কম। পিলারের মাঝখান দিয়ে এক সাথে একাধিক নৌযান চলাচল করতে গেলেই বিপত্তি! গত মাসে নারায়নগঞ্জ থেকে চাঁদপুর যাওয়ার পথে একই জায়গায় সরু জায়গায় আমিও ভরকে গিয়েছিলাম।নির্মানাধীন সেতুর দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের নিদারুণ অসচেতনতা চোখে পড়ার মতো।
Inland Shipping Ordinance,1976 অনুসারে লঞ্চের ফিটনেস চেক, নৌ-ট্রাফিক ব্যবস্থা, নৌ-বিমাসহ যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা নৌ-পুলিশ ও পরিদর্শকের কাজ। তাদের কাজে গাফলতির জন্য শাস্তির কথাও বলা আছে আইনটিতে, বাস্তবে যদিও আইনটির প্রয়োগ নজরে পড়ে না।
এদেশে আমলারা এখন ব্রিটিশ আমলের বাবুদের মতো আচরণ শুরু করেছে। নৌ পথের চরম অব্যবস্থাপনা ও দূর্নীতির জন্য প্রশাসন তাদের দায় এড়াতে পারে না। নৌ-পুলিশের প্রধান কাজ হয়ে গেছে জেলে ও নৌপথের বাল্কহেড,লাইটার জাহাজ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলা। উউদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশে অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচলের বিদ্যমান আইনের কার্যকারিতা এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এখন সময়ের দাবি।
নৌ পথের আইনি দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির সুবিধাভোগী (লঞ্চ মালিক- প্রশাসন) নৌ পথে পথে এ ধরনের দূর্ঘটনার ফাঁদ পেতে রেখেছে। এর আগেও এরকম হত্যাকান্ডে হাইকোর্ট ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করেছে দোষী ব্যক্তিদের। তাই ভুক্তভোগী পরিবার দোষীদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।