আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

দিনাজপুরে আইসিটি আইনে দায়ের করা এক মামলায় গ্রেফতার মশিউর রহমান (২২) নামের এক তরুণ স্বেচ্ছাসেবীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মশিউর ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দোগাছি গ্রামের বাসিন্দা এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সভাপতি। তিনি দিনাজপুর আদর্শ কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি টয়লেটের দরজায় থাকা বঙ্গবন্ধুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে ওয়ার্ড মাস্টার মো. ফারুক উল আলম ওই মামলা করেন।

তার সহপাঠীরা জানিয়েছেন, মশিউর একজন রক্তদাতা ও করোনাযোদ্ধা, তিনি জেলা প্রশাসক স্বেচ্ছাসেবী টিমের সদস্য হিসেবে করোনাকালীন সময়ে কাজ করেছেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত রোববার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে মশিউর তার এক বন্ধুর আত্মীয়কে রক্তদানের জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। রক্তদান শেষে ফেরার পথে হাসপাতালের নিচতলায় পরিত্যক্ত টয়লেটের দরজায় জাতির জনকের ছবিটি দেখতে পেয়ে সেটির ছবি তুলে ফেসবুকে দেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘বিষয়টা খুব দুঃখজনক’।

তবে মামলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, মশিউর নিজেই বঙ্গবন্ধুর ছবিটি টয়লেটের দরজায় রেখে ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছেন। বতর্মান সরকার ও জাতির পিতার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছাড়ানোর উদ্দেশ্যেই তিনি এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছেন।

অন্যদিকে, তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি তুলে ধরতেই তিনি (মশিউর) ওই ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। নিজেদের দায় এড়াতে এখন তার বিরুদ্ধেই মামলা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নাজমুল সময় সংবাদেকে বলেন, ‘মশিউরকে অন্যায়ভাবে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং গাফিলতির কথা তুলে ধরেছে। রক্ত দেয়ার নাম করে ডেকে সাদা পোশাকে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের দোষ ঢাকতে মশিউরের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেছে।’

সেভ দ্য ফিউচার ফাউন্ডেশন দিনাজপুরের প্রধান উপদেষ্টা হরিদাস মহন্ত বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালি থানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। মশিউরের পোস্টটি তদন্ত করে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল। জাতির পিতার ভাবমূর্তি ও সম্মান রক্ষার দায়িত্ব দেশের সব জনগণের। আমরা মনে করি, পোস্টটি সচেতনতামূলক ছিল।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *