আরিফ মিয়া রিপোর্টার:

দেশব্যাপী ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়ছে হু হু করে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন অনেকে। তাই সচেতনতার কোনো ত্রুটি না রাখতে নিষেধ করে যাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ ও ডাক্তাররা। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জেও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষজন। তাই জনস্বার্থে এখানকার জনপ্রতিনিধিরাও বিভিন্ন উদ্যোগের পরিকল্পনা করেছেন বলে জানিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিকের) মধ্যকার প্রথম ১০টি ওয়ার্ড রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জে। যা অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বলে গণ্য করা হয়। কেননা এখানে জনসংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি। সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী ২ লাখ ৫৬ হাজার জনসংখ্যা দেখালেও তার চেয়ে বহুগুণ বেশি মানুষের বসবাস রয়েছে। শুধুমাত্র রপ্তানি প্রত্রিয়াকরণ আদমজী ইপিজেডেই অর্ধলক্ষ কর্মজীবি মানুষ কর্ম করেন।

খবর নিয়ে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জে ইতোমধ্যে কয়েকজন মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বাসায় অথবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের মধ্যে কথা হয় মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার বাসিন্দা বীথির সঙ্গে। তিনি জানান, দীর্ঘ ৬ দিন ধরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন সে। ডাক্তারের পরামর্শে বৃহস্পতিবার সকালে বাসায় ফিরেন।

গুরুত্বপূর্ণ এ থানার অধীনস্থ কাউন্সিলরদের সঙ্গে ডেঙ্গু রোগ থেকে রক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে তারা তাদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
এখানকার কাউন্সিলররা যা বলেছেন তা হলো।

ডেঙ্গু সচেতনতায় করনীয় সম্পর্কে (নাসিক) ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন বলেন, ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়ার খবর শোনামাত্রই আমরা আমাদের পুরো এলাকাজুড়ে মশা নিধনের ফগার মেশিন দ্বারা ঔষধ ছেটানো শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত আমাদের এলাকায় এ রোগে আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আমরা সর্বক্ষণ প্রস্তুত রয়েছি।

এ বিষয়ে (নাসিক) ১ নং ওয়ার্ড আলহাজ্ব আনোয়ার ইসলাম বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পক্ষে থেকে আমার ওয়ার্ডে মশক নিধন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার যেসব স্থানে মশার উৎপাদন হয়ে থাকে সেসব স্থানে লিকুইড এবং ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশার ঔষধ দেওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে এখানে কেউ এখনো ডেঙ্গু রোগে শনাক্ত হয়নি। অনেকের জ্বর হচ্ছে, কিন্তু সেটা ডেঙ্গু নয়। সেটাও আমার কাছে অবহিত করেছে অনেকে। আমি সবার উদ্দেশ্যেই বলেছি তাদের বাসাবাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে। ইতিমধ্যে আমাদের ওয়ার্ডে পাঁচ জন মশক নিধন কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মশার ঔষধ দিয়ে আসছে।

জনসাধারণের ডেঙ্গু রোগ থেকে রক্ষার জন্যে ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির উদ্যোগের কথা জানতে চাইলে তিনি জানান, ডেঙ্গু রোগের জন্য ইতিমধ্যে আমরা মশার স্প্রে দেওয়া শুরু করেছি। এবং আমার পুরো এলাকাজুড়ে সচেতনামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের এখানকার যতগুলো মসজিদ মাদ্রাসা রয়েছে সেগুলোতে আজ (শুক্রবার) জু্ম্মার পর আমরা লিফলেট বিতরণ করবো।
তার ওয়ার্ডস্থ এসো তেলের ডিপো সংলগ্ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়ে রয়েছেন। এতে ডেঙ্গু মশার উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে তার জন্যে কি উদ্যোগ নিয়েছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ এলাকার ময়লাটা দীর্ঘদিন যাবত ফালানো হয়।

মূলত সিটি করপোরেশনের ময়লাগুলো সেখানে ফালায়। ওইখানের ময়লাগুলো সরানোর জন্যে আমি গতকাল মিটিং করেছি। আগামী একসপ্তাহের মধ্যে ক্লিয়ার হয়ে যাবে ময়লা আবর্জনা। পাশাপাশি আমাদের আদমজী এলাকার বড় খালটিতে কচুরিপানায় ভরে আছে। এটার জন্যে ডেঙ্গু সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ বিষয়ে আমি সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যদি পানি নিষ্কাশন করে তো করলোই না হয় আমি নিজ উদ্যোগে দ্রুত করে দিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *