শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছেন, জাহাজ ও নৌ সংক্রান্ত শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট’ প্রবর্তনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ মেরিটাইম বাংলাদেশের ভিত রচনা করে গেছেন। সেটাকে ভিত্তি করে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ২০১২ সালে মিয়ানমারের সাথে ও ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ-সংক্রান্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি হয়েছে।

এর মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় আমাদের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই অর্জনের ফলে সুনীল অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করার সুযোগ তৈরি হয়েছে । সুনীল অর্থনীতির কিছু ক্ষেত্র চিহ্নিত করে সেগুলো কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমুদ্রগামী জাহাজ বা নৌ সংক্রান্ত এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন এবিষয়ে সহায়ক হবে।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর কুড়িলে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) তে ”বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেরিন এন্ড অফশোর এক্সপো -২০২২” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, মেরিন এন্ড অফশোর বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় খাত। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশী কোম্পানিগুলো এক্ষেত্রে যথেষ্ট ভালো করছে। এ খাতে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মালামাল পরিবহনের জন্য রেলপথের পাশাপাশি জলপথ হলো সবচেয়ে সহজলভ্য ও পরিবেশ বান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা। বিশ্বের শতকরা ৯০ ভাগের অধিক ব্যবসা বাণিজ্য নৌপথে সম্পন্ন হয়। এজন্য অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক নৌপথে চলাচলের উপযোগী জাহাজ বা নৌযানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, জাহাজ নির্মান ও রফতানি করে বাংলাদেশ জাহাজ নির্মানকারী জাতি হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছে। নীতিগত ও আর্থিক বিষয়ে সরকারের অব্যাহত সহায়তা এবং সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত
প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে। পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের নিকটবর্তী এলাকায় শিপইয়ার্ড নির্মানের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল কর্পোরেশন (বিএসইসি) বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য জায়গার সংস্থান করে দিয়েছে।

পরে শিল্পমন্ত্রী প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত পণ্য ও সরঞ্জামাদি ঘুরে দেখেন। উল্লেখ্য বাংলাদেশের স্যাভর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং সিংগাপুরের ফায়ারওয়ার্কস ট্রেড মিডিয়া গ্রুপ যৌথভাবে চতুর্থবারের মতো জাহাজ নির্মাণ শিল্প, মেরিটাইম ইঞ্জিনিয়ারিং, অফশোর ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি, শিপ -ব্রেকিং ইকুইপমেন্ট, বন্দর ও এর সম্পর্কিত বিভিন্ন লজিস্টিক ও টেকনোলজি বিষয়ক তিন দিন ব্যাপী এই আন্তার্জাতিক প্রর্দশনীর আয়োজন করেছে।

শিপ রিসাইক্লিং, অফশোর অয়েল এন্ড গ্যাস সাপোর্ট, শিপিং লজিস্টিক, পোর্ট, ফিশিং ভেসেলস ফিশারী শিপ বিডিং এবং প্রসেস অটোমেশন শীর্ষক বিষয়বস্তু প্রর্দশনীতে স্থান পেয়েছে। প্রর্দশনীটি ২০ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত সর্ব সাধারনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রর্দশনীতে ১৪ টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মোট ১৬০ টিরও বেশী স্টলে তাদের পণ্য প্রর্দশন করছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডোর মোঃ নিজামুল হক, খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
কমোডোর মোঃ শামসুল আজিজ, ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ-আল-মাকসুস, স্যাভর ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফায়জুল আলম, ফায়ারওয়ার্কস ট্রেড মিডিয়া গ্রুপ, সিঙ্গাপুর এর সিইও কেনি ইয়ং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *