আসলাম উদ্দিন আহম্মেদ, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
পরীক্ষার আগের রাতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব পরদিন সকালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেন প্রসূতি ।
ঘটনাটি, কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার।
ওই পরীক্ষার্থী উপজেলার পাত্রখাতা রিয়াজুল জান্নাত মাদ্রাসা থেকে এবারের দাখিল পরীক্ষায় তিনি অংশ নিয়েছেন।
জানা গেছে, গত ২৯ এপ্রিল রাতে উলিপুরের একটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তিনি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।কিন্তু পরীক্ষায় অংশ না নিলে একটি বছর চলে যাবে , এই আশঙ্কা থেকে তিনি পরের দিন (৩০ এপ্রিল) পরীক্ষায় অংশ নেন বলে জানান। পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলার রাজারভিটা ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ড. মোঃ মিনহাজুল ইসলাম।
ওই শিক্ষার্থী জানান, স্বামীর সম্মতিতে আমি পড়াশোনা করছি। তাই এবছর দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছি। পরীক্ষায় অংশ না নিলে একটি বছর নষ্ট হয়ে যাবে। তাই কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমদিন কেন্দ্রে দেরিতে পৌঁছেছিলাম।
প্রথমদিন থেকেই আলাদা কক্ষে বসে পরীক্ষা দিচ্ছি। অসুস্থ থাকলেও পরীক্ষা দিতে পেরে আমার ভালো লাগছে। পরীক্ষাও ভালোভাবে দিতে পারছি। আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন।’
কেন্দ্রে নাতিকে নিয়ে বসে থাকা ওই পরীক্ষার্থীর মা বলেন, ‘সন্তান সম্ভবা হওয়ায় মেয়েকে বলেছিলাম পরীক্ষা না দিতে। তাকে বলেছিলাম আগামী বছর পরীক্ষা দেওয়া যাবে। তারপরও তার ইচ্ছা সে পরীক্ষায় অংশ নেবে।
এর মধ্যে পরীক্ষার আগের রাতে তার প্রসব বেদনা শুরু হয়। পরে ছোট একটি অপারেশনের সাহায্যে সে বাচ্চা প্রসব করে। এরপরও সে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য জেদ ধরলে তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে সম্মতি দেই।’
কেন্দ্র সচিব ড. মো. মিনহাজুল ইসলাম জানান, ‘প্রথম পরীক্ষার দিন ভেবেছিলাম ওই পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। পরে পরীক্ষা শুরুর প্রায় ৩০মিনিট পর সে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়। সাথে শিশু সন্তান। পরে আমরা আলাদা কক্ষে তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করি। অল্প বয়সে সন্তানের মা হলেও পড়ালেখার প্রতি তার আগ্রহের বিষয়টি আমাদেরকে আশান্বিত করেছে। নিয়ম অনুযায়ী আমরা তাকে প্রয়োজনীয় বাড়তি সময় দিচ্ছি।