নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘এর আগেও অনেক বার আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেছি। এত দিন আমার কষ্ট লাগেনি।

তবে, এখন কষ্ট লাগে। ‘কয়েকদিন আগে আমার বাবা-মা ও বড় ভাইসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে শ্মশানের মাটি ফেলা হয়েছে।

আমি রেগে গেলে রাস্তায় তার প্রভাব পড়ে। এখনও ডাকলে দুই-চার লাখ লোক আসে। মৃত্যুর আগে বাবা শেখ হাসিনার হাতে আমাদের হাত তুলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ওরা মারা গেলেও কোন আফসোস থাকবে না।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়নে একেএম শামসুজ্জোহার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমার মেঝ ভাই ক্লাস নাইনে থাকতে মুক্তিযুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন, বড় ভাইও ছিলেন। আগে মানুষ বলতো ওই বাড়ির সবাই রাজনীতি করে, তারা সততার প্রতীক।

সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি আমরা। তবে, ১৯৭৫ সালের পরে একবেলা ভাত খেয়েছি একবেলা খাইনি। ৯০০ টাকার জন্য ফরমফিলাপ করতে পারিনি। ইচ্ছে করলে নারায়ণগঞ্জের অর্ধেক কিনে নিতে পারতেন। পঁচাত্তরের পরে আমার মাকে গিফট করা হীরা মহলও বন্ধক রেখেছিলেন ১৯৭৪ সালে।

বাস্তবতা হলো সেদিন যা দেখেছি আগামীতে দেখবো জানি। সেদিন কোন ধনী লোক এগিয়ে আসেনি। আদমজী মিলের শ্রমিকরা এক টাকা করে চাঁদা দিয়ে ছাড়িয়ে দিয়েছিল। বাবা বলেছিলেন বাড়িটা এখন আর আমার না তোমরা শ্রমিকের বাড়িতে বড় হচ্ছো। তাই তাদের জন্য কথা বলি। ’

এমপি শামীম ওসমান বলেন, ‘রাজনীতি মানে এবাদত। রাজনীতি মানে মানুষকে খুশি করে আল্লাহকে খুশি করা। এটা আমার বড় ভাই পেরেছিল, বাবাও পেরেছিল। আমরা হয়ত পারিনি। ’

তিনি বলেন, ‘তাদের কাউকে সাক্ষী রেখে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিক৷ এটাই আমাদের জন্য প্রাপ্য। সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গিয়ে বলেছিলাম আমি আর কিছু চাই না। তখন তিনি বললেন, তোমার বাবা আমাদের জন্যেও রক্ত দিয়েছেন। তিনি আমার চাচাও। তিনি কী পরিমাণ আল্লাহ ওয়ালা মানুষ তা আমি দেখেছি।

আমাদের জীবনের ভরসা নেই। তাই সবাই সবার জন্য মাফ চাই৷ যারা চলে গেছেন আমি তাদের জন্য দোয়া করছি। আপনারা আমার বাবা-মা ও বড় ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন এবং দোয়া করবেন আল্লাহকে খুশি করে আমি যেন মরতে পারি। ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *