আসলাম উদ্দিন আহম্মেদ, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
উত্তরের হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠান্ডায়
কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে শৈত্য প্রবাহ।
৮ জানুয়ারী রোববার সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।

কুয়াশা আর শৈত্য প্রবাহে জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে। বেলা বাড়লেও মিলছে না সূর্যের দেখা। এ অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষজন। রেহাই পাচ্ছে না পশুপাখিরাও। গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীত কষ্টে ভুগছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।

শ্রমজীবী মানুষেরা জীবন-জীবিকার তাগিদে কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করেই কাজে বের হতে হচ্ছে।কিন্তু
তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমরসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকার চরের মানুষজন।

কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর যাত্রাপুর এলাকার এনামুল হক বলেন,’কনকনে ঠান্ডায় বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। তারপরও বের হলাম। কাজ না করলে সংসার চলবে না। শীতবস্ত্র নাই। খুব কষ্টে আছি।’
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের গারুহাড়া গ্রামের কৃষ্ণ নামের এক জেলে বলেন,’আজ প্রচুর ঠান্ডা পড়ছে তার পরেও জীবিকার তাগিদে বাহির হয়েছি। যতই ঠান্ডা হোক না কেন আমাদের বাহির হতে হয়। বাহির না হলে যে সংসার চলবে না।’

এদিকে গত কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ শীত জনিত নানা রোগ। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক। কুড়িগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট বেডের বিপরীতে দ্বিগুনেরও বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। বর্হিবিভাগেও বেড়েছে রোগীর সংখ্যা।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ শাহিনুর রহমান শিপন জানান, হাসপাতালে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেশি। তারপরও সাধ্যমত চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।

এছাড়াও জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া, সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, বজরা, গুনাইগাছ, থেতরাই ও দলদলিয়া ইউনিয়নে চরাঞ্চলের নদী বেষ্ঠিত এলাকায় ঠান্ডার প্রকোপে জনগণের দূর্দশা বেড়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক তুহিন মিয়া জানান, রোববার সকাল ৬টায় কুড়িগ্রাম জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এছাড়াও তাপমাত্রা কমার আরও সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *