তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি

রাজশাহীর তানোরে বোরো মৌসুমে ধান ও খড়ের বাম্পার ফলন এবং ভাল দাম পেয়েছেন কৃষক। ফলে চলতি মৌসুমে বেশ আগ্রহ নিয়ে কৃষকরা আমণ চাষ শুরু করেন। আমণের ভরা মৌসুমে পুরো মাঠ এখন সবুজের সমাহার।

আমণের শুরু থেকে এবার অতি বৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু জমিতে বেশি বৃষ্টি পেয়ে খুশি হয়েছিল কৃষকেরা। তাদের মনে অনেক স্বপ্ন ও আশা জেগে উঠেছিল ধান নিয়ে। সবই ঠিকঠাক ছিল। কিন্ত মাঝামাঝি সময়ে এসে আমনখেতে মৃদু পচন ও পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়াই কৃষকের সেই স্বপ্ন উবে যেতে বসেছে।

আমণখেতে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করেও পুরোপুরি পোকার আক্রমণ দমন করতে পারছে না কৃষকেরা। এতে কৃষকেরা আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। এদিকে স্থানীয় কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে থেকে কৃষকেরা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, অধিকাংশ সময় তারা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে তেমন কোনো পরামর্শ না পেয়ে কীটনাশক ব্যবসায়ীদের পরামর্শে অনুমান নির্ভর হয়ে উচ্চ মুল্যর কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাঙ্খিত ফল পাচ্ছেন না। অধিকাংশ সময় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত ফসলের মাঠ পরিদর্শন করেন না বলেও কৃষকদের অভিযোগ।

তানোর পৌর এলাকার আমশো তাঁতিয়ার পাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল জানান, তার প্রায় দুবিঘা আমণখেত পোকার আক্রমণে নষ্ট হতে চলেছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন কোম্পানীর কীটনাশক ব্যবহার করেও তেমন কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে কলমা, পাঁচন্দর ইউপি ও মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় পাতামরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাঠ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমনে মৃদু পচন ও পোকার আক্রমণের জন্য শুরুতে অতি বৃষ্টি ও মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাপসা গরমকে দায়ী করছেন। পাশাপাশি মাঠ এবার গুটি স্বর্না ও একান্ন জাতের ধান বেশি চাষ হওয়ার এটাও একটা কারণ বলে মনে করছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৫৮৯ হেক্টর।

এর মধ্য হাইব্রিড ২২ হেক্টর, উফশী জাত ২২ হাজার ১১৭ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের চাষ হয়েছে ৪৫০ হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ২১৮ মেট্রিক টন। তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিমুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের অভিযোগ সঠিক নয়, তিনি বলেন, এবার তেমন পচন রোগ নাই, পোকার আক্রমণ রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে।

তিনি আরো বলেন, অনুকুল আবহাওয়া ও সময়োপযোগী বৃষ্টি হওয়ায় তানোরে অনেক জমিতে আমণ চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারী ভাবে বীজ সারসহ বেশ কিছু সহায়তা দেয়া হয়েছে, সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *