তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় আলোচিত পৃথক দুই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করলেন পুলিশ। মাকে হত্যার ঘটনায় নিহতের একমাত্র ছেলেকে আটক করা হয়েছে (অপ্রাপ্ত হওয়ায় নাম প্রকাশ করা হলোনা)।

এ ছাড়াও অপর ঘটনায় স্ত্রীর প্রেমিক হত্যায় স্বামী জিতেন চন্দ্র পণ্ডিত ও তার ভাই জয় চন্দ্র পণ্ডিতকে আটক করেছেন পুলিশ। দুটি ঘটনায় তানোর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।নিহতরা হলেন-মনিরুল ইসলাম ও গৃহবধূ তহুরা বেগম।

শনিবার ৪ সেপ্টেম্বর তানোর থানার ওসি রাকিবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে পরকীয়া প্রেমের দায়ে মনিরুল ইসলামকে হত্যা করা হয়। নিহত মনিরুল ইসলাম হলেন উপজেলার কামারগাঁ ইউপির দূর্গাপুর গ্রামের শুকুর উদ্দিন মোল্লার ছেলে।এছাড়া গত ২৪ আগস্ট রাতে একমাত্র ছেলেকে পড়তে বসতে বলাতে মা তহুরা বেগমকে হত্যা করে লাশ বাড়ির বাইরে ফেলে রাখে ছেলে।

নিহত তহুরা বেগম হলেন মুণ্ডুমালা পৌর এলাকার টকটকিয়া মহল্লার বাসিন্দা।পুলিশ বলেন, প্রায় ১৮ বছর আগে তানোর পৌর এলাকায় বুরুজ মহল্লার বাসিন্দা কাইয়ুম মিয়ার সঙ্গে তহুরার বিয়ে হয়। তহুরার স্বামী কাইয়ুম মিয়া ৩ বছর আগে হেরোইনসহ র‌্যাবের হাতে আটক হয়ে এখন কারাগারে আছেন।

এরপর থেকে তহুরা তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকতেন। প্রতিদিনের মতো বাড়ির সবাই গত ২৪ আগস্ট রাতে ঘুমাতে যান। পরদিন সকালে বাড়ির পাশে মাটিতে তহুরার লাশ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় ওই দিনই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে নিহত তহুরার বাবা আহম্মদ হাজী মামলা দায়ের করেন।

ওসি বলেন, মৃত তহুরা ও তার ছেলে এক ঘরে ঘুমাতেন। ছেলে গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় ইংরেজীতে ফেল করে। ঘটনার রাতে তহুরা তার ছেলেকে পড়তে বসতে বললে সে (ছেলে) শুয়ে পড়ে। এতে তার মা তাকে ধমক ও থাপ্পড় দেয়। আরেকটা থাপ্পড় মারতে গেলে ছেলে মাকে ধাক্কা দেয়। এতে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তহুরা।

ঘটনার পর ছেলে মায়ের লাশ বাইরে রেখে আসে।ওসি আরোও বলেন, উপজেলার কামারগাঁ ইউপির দূর্গাপুর গ্রামের শ্রী জিতেন চন্দ্র পণ্ডিতের স্ত্রী কামনা রানী বেশ কয়েক মাস আগে একই গ্রামের নিহত মনিরুলের পরকীয়া প্রেমে আবদ্ধ হন। এ ঘটনা পরিবারের লোকজন জানতে পারে। পরে কামনা রানীর ঘরে মনিরুলকে দেখে জিতেন ও তার ভাই জয় পণ্ডিত ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।

পরে তারা গ্রামের পাশে তানোর-চৌবাড়িয়া সড়কের ধানক্ষেতে ড্রেনের ভিতরে নিহতের লাশ ফেলে আসে।দুটি ঘটনায় মৃতের পরিবারকেই সন্দেহ হতে থাকে। ফলে, ৩১ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর পুলিশ মৃত তহুরার ছেলেকে এবং অপর ঘটনায় জিতেন চন্দ্র পণ্ডিতকে ডেকে নিয়ে জেরা করলে তারা হত্যা ঘটনা স্বীকার করে। পরে রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালতে তাদেরকে হাজির করা হয়। তারা আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ।#

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *