তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় কথিত সাংবাদিকের মাদক সেবন, দালালী, নানামূখী অনৈতিক কর্মকান্ড ও চাঁদাবাজিতে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি বিজয় মেলার পুরুস্কারের টিকেট চুরি ও তাঁর পায়ুপথ থেকে উদ্ধারের ঘটনায় উপজেলা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃস্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
স্থানীয়রা জানান, শীতলীপাড়া গ্রামের এক শিশু উপজেলা মাঠে আয়োজিত বিজয় মেলা থেকে ২০ টাকা দিয়ে লট্রারির টিকেট কিনে প্রথম পুরুস্কার পায়। কিন্ত্ত টিকেট দেখার কথা বলে তার কাছে থেকে টিকেট নিয়ে বিশেষ কৌশলে লুকিয়ে রেখে অন্য একটি টিকেট তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে পালানোর চেস্টা করে ওই কথিত সাংবাদিক।

এ সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে মেলা কমিটির কাছে জমা দেয়। খবর পেয়ে তার শাস্তির দাবিতে শীতলিপাড়ার বিক্ষুব্ধ নারি-পুরুষ ঝাড়ু মিছিল প্রদর্শন করে। এদিকে কমিটির লোকজন তাকে টিকেট ফেরত দেবার অনুরোধ করেন, তবে তিনি বার বার তা অস্বীকার করেন। ফলে বাধ্য হয়ে তারা তাকে প্রকাশ্যে দিগম্বর করে বিশেষ কৌশলে পায়ুপথে লুকিয়ে রাখা টিকেট উদ্ধার ও কানধরে উঠবস করিয়ে ছেড়ে দেয় বলে আলোচনা রয়েছে।

এছাড়াও সোনালী ও কৃষি ব্যাংক থেকে প্রায় কুড়ি লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ বা খেলাপীর দায়ে একাধিক ওয়ারেন্ট রয়েছে, স্ত্রীর চিকিৎসার কথা বলে এক সরকারী কর্মকর্তার কাছে থেকে১০ হাজার টাকা ধার নিয়ে ফেরত না দেওয়া, মুন্ডুমালার এক ছেলের সঙ্গে তার মেয়ে পালিয়ে যায় এ ঘটনায় মামলার ভয় দেখিয়ে ছেলের পরিবারের কাছে থেকে ৩ লাখ টাকা আদায়।

পুলিশের ভয় দেখিয়ে ভেঁকু ঠিকাদার জনৈক শরিফুলের কাছে থেকে ২০ হাজার ও জনৈক নাজমুলের কাছে থেকে ৮ হাজার টাকা এবং মুন্ডুমালা ইট ভাটা থেকে ১২ হাজার টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করেন বলে সাধারণের মুখে মুখে প্রচার আছে। আবার বাজার থেকে মুরগী ও মাছ বাঁকি নিয়ে টাকা না দেয়া এবং হার্ডওয়ার দোকানীর প্রায় লাখ টাকা না দিয়ে আত্মসাৎ, পরোকিয়ার অভিযোগে নিজ স্ত্রীকে বিষপাণে হত্যা, মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামে কথিত প্রেমিকার সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক,
দামকুড়া মেলায় ভ্যারাইটি শোর ড্যান্সারের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক, কমিউনিটি ক্লিনিকের নারী কর্মীকে ধর্ষণের চেস্টা, ভিক্ষুক নারীর টাকা আত্মসাৎ ও সম্ভ্রমহানির ঘটনায় তিন মাসের কারাভোগসহ নিজ ভাগ্নিকে কলগার্ল আঙ্খা দিয়ে কলেজ পড়ুয়া যুবকের সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়ার গুঞ্জন রয়েছে। স্থানীয়রা বলছে, কথিত এই সাংবাদিকের এক ছটাক সম্পত্তি, নাই কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য আবার তিনি যেই পত্রিকায় কাজ করেন সেখানেও নেই কোনো সম্মানী ভাতা তাহলে এতোঠাটবাট তার আসে কোথা খেকে, তারা বলেন, তার প্রধান কাজ নিরহ ব্যক্তির নামে মামলা দিয়ে আপোষ রফার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়া। সাধারণ মানুষের কাছে এখন মূর্তিমান আতঙ্ক। তিনি একজন (সাংবাদিক) ঘুরেন মোটর সাইকেলে উপজেলার একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত সব প্রান্তেই তার বিচরণ। কিন্ত একজন সৎ সাংবাদিকের ভালো গুন থাকলে যে বিচরণটা লক্ষ্য করা যায় সেই গুনের অধিকারী তিনি নন। চাঁদাবাজী ও থানার দালালী করেই তার জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। সম্প্রতি তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাহিদ হাসানের কাছে চাঁদা দাবী করে না পাওয়ায় তাকে নিয়ে একের পর এক মিথ্যা-ভিত্তিহীন স্ট্যাটাস দিয়েছে, যা নিয়ে পুরো উপজেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠে।

এছাড়াও মুন্ডুমালা মাহালীপাড়ায় ঝড়ে পড়া ছোট একটি নিম গাছ কেটে মসজিদের কাজে লাগানোর অপরাধে কাউন্সিলরকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে আড়াই হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।পুলিশের নাম ভাঙিয়ে
মহানগর ক্লিনিক থেকে ১০ হাজার ও মডার্ন ক্লিনিক থেকে ১২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও স্ত্রীর অপারেশন করার কথা বলে তানোর ও মুন্ডুমালা পৌরসভার দুই মেয়রের কাছে থেকে ২০ হাজার টাকা ধার নিয়ে না দেয়া, জেলা পরিষদের বরাদ্দ পাইয়ে দেবার কথা বলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের নামে বিভিন্ন মসজিদ-মন্দির কমিটির কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ারও গুঞ্জন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এই সাংবাদিকের সঙ্গে ফেন্সিডিল, গাঁজা, ইয়াবা ও চোলাইমদসহ বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে অপরাধীদের রয়েছে গভীর সখ্যতা। আর এই কারণেই তিনি গোটা এলাকা চষে বেড়ান।

এছাড়াও ঠাকুরপুকুর গ্রামের মাদক স্পট থেকে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি করে বলেও আলোচনা রয়েছে।আবার হক নামের এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছে থেকে দফায় দফায় পুলিশের ভয় দেখিয়ে প্রায় লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। তিনি অনেক নিরিহ সহজসরল ও সাদাসিধে মানুষকে নাশকতা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করেন আর না দিলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা-বানোয়াট খবর প্রকাশ করে অযথা হয়রানি করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে স্ত্রী হত্যা, মোহনপুর খানায় নারীর সঙ্গে ফুর্তি করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে আটক, চাঁদাবাজী, মেলার পুরুস্কারের টিকেট চুরি পায়ুপথ থেকে উদ্ধার, ইয়াবা-গাঁজা-ফেন্সিডিল, হেরোইন, গরম চুয়ানীসহ মাদক সেবন ও ইয়াবা বিক্রির কথাও প্রচার রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন ভুক্তভোগী জানান, এই সাংবাদিক আমনুরা, মাদারীপুরসহ বিভিন্ন মাদক স্পটে নিয়মিত চাঁদাবাজী করেন।
তানোর পৌরসভার হরিদেবপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান মাস্টারকে ইউএনও’র ভয় দেখিয়ে ১৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, এবং ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে মেলান্দী হিন্দু পাড়া গ্রামের এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে মোবাইল ফোন ও কুড়ি হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে তার আরো কয়েক সহযোগীর বিরুদ্ধে থানায় দালালীর অভিযোগ রয়েছে, এরা সকাল ধেকে গভীর রাত পর্যন্ত থানা চত্ত্বরে অবস্থান করেন। তাদের প্রধান কাজ থানায় কে কখন কার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসছে আর অভিযোগের তদন্ত কোনো কর্মকর্তার (দারোগা) উপর পড়ছে, সেটা নিশ্চিত হয়ে এরা তদন্ত কর্মকর্তার নামে বাদী-বিবাদী উভয়ের কাছে থেকে টাকা আদায় করে নিজেরা ভাগাভাগী করে নিচ্ছেন। আর তাদের এসব অকর্মের কারণে পুলিশের সুনামক্ষুন্ন হচ্ছে, অথচ এসব অপকর্মের সঙ্গে পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততাই নাই এরা সাংবাদিকতা পেশাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে। প্রতিদিন দুপুর বিকেল পর্যন্ত আমনুরা মাদক স্পটে এবং
সন্ধ্যার পর তানোরের পাঁচপির ও কাউন্সিল মোড়ের পুকুর পাড়ে এদের গাঁজা ও ইয়াবা সেবনের আসর বসে। তিনি প্রতিদিন দুই সহযোগী নিয়ে আমনুরা যাতায়াত করেন তাদের দেহ, মানি ব্যাগ তল্লাশী করা হলেই ইয়াবা-গাঁজা পাওয়া যাবে।

তাদের রাহুগ্রাস থেকে বাদ পড়েনি পেশাদার সাংবাদিক পরিবারও এক জৈষ্ঠ সাংবাদিক বলেন ,তাদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা হয়েছে ওই মামলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়ার কথা বলে দারোগার নামে তার পরিবারের কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে থানার দালালরুপী ওই কথিত সাংবাদিক। তানোরে কর্মরত একাধিক পেশাদার সাংবাদিক বলেন, এসব অপসাংবাদিকতার কারণে পেশাদার সাংবাদিকগণের সুনামক্ষুন্ন হচ্ছে। তারা বলেন, পুলিশের সঙ্গে সাংবাদিকের মধুর সম্পর্ক থাকবে সেটাই স্বাভাবিক, কিন্ত্ত পুলিশের নামে প্রতারণা করা বা বাদী-বিবাদীর কাছে থেকে টাকা আদায় করা জঘন্যকাজ, যারা এসব কাজে জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশেরই ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ নইলে এদের কারণে পুলিশ বাহিনীর সুনামক্ষুন্ন হবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *