চট্টগ্রাম সংবাদ দাতা

মেশিনারি ও ববিন ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে নিয়ে আসা দুই কনটেইনার মদে পৌনে ২৫ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে।

রোববার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার (এআইআর) মো. সাইফুল হক।

তিনি জানান, পণ্য চালানটি আটকের পর জব্দ তালিকা প্রস্তুত শুরু করে সংশ্লিষ্টরা। শনিবার প্রথম কনটেইনারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৬ হাজার ১১৭ দশমিক ৫ লিটার মদ পাওয়া যায়। যার শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে।

অন্য কনটেইনারটি র‍্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে জব্দ তালিকা তৈরি করা হয়। সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৫ হাজার ৫০৮ লিটার মদ পাওয়া যায়। এর শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ১৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডেপুটি কমিশনার সাইফুল হক বলেন, ‘দুই কনটেইনারে ১ হাজার ৩৩০টি কার্টনে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩১ হাজার ৬২৫ দশমিক ৫ লিটার বিদেশি মদ পাওয়া যায়। এসব মদের শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ৪ কোটি ৪৬ লাখব টাকা। উচ্চশুল্কের পণ্য হওয়ায় এই চালানের মাধ্যমে ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছে।’

এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা ২ কনটেইনার মদ জব্দ করা হয়। র‍্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও এলাকা থেকে এসব মদ জব্দ করে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে ডেপুটি কমিশনার সাইফুল হক বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই কনটেইনার মদ খালাস হবে বলে জানতে পারি। কিন্তু নিরীক্ষা, অনুসন্ধান ও গবেষণা (এআইআর) টিম অনুসন্ধান করে জানতে পারে মেশিনারি ও ববিন ঘোষণায় নিয়ে আসা এই চালানটি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় খালাস হয়ে গেছে।

‘পরবর্তী সময়ে ট্রেইলার নম্বর ট্র্যাক করে গোয়েন্দা সংস্থা, র‍্যাব ও হাইওয়ে পুলিশের সহায়তায় নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে চালানটি আটক করা হয়।’

তিনি জানান, আইপি জালিয়াতির মাধ্যমে কুমিল্লা ও পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডের হেশি টাইগার কোম্পানি ও বিএইচকে টেক্সটাইলের নাম ব্যবহার করে কন্টেইনার দুটি খালাস করা হয়।

বুধবার চীন থেকে আসা ১৯ হাজার ৬৫০ কেজি ও ২০ হাজার ৭৫০ কেজি ওজনের কন্টেইনার দুটির বিল অফ এন্ট্রি দাখিল করে চট্টগ্রামের ডবলমুরিংয়ের ৬৯৯ কেবি দোভাষ লেনের জাফর আহমেদ সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপপরিচালক শেখ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ভুয়া আইপি ব্যবহার সত্ত্বেও কিভাবে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হলো এবং স্ক্যানিং ও গেইট ডিভিশনকে ফাঁকি দিয়ে কিভাবে পণ্য চালান দুটি খালাস হলোসহ সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *