নিজস্ব সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তার ঘর থেকে ২০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) সকাল ৭:৩০ টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নগরীর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের মাওলা বাজার এলাকায় ও-ই দূর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল হালিম (৭২) মাওলা বাজার এলাকার মৃত মহব্বত আলী’র পুত্র।

নিহতের পুত্র হাফেজ মোঃ মাসুদ জানান- পরিবারের লোকজন মঙ্গলবার আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যায়। রাতে আমার বাবা তার নিজ রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাতে আনুমানিক ১১টার সময় ঘুমন্ত অবস্থায় তিনজন লোক তার হাত পা ও চোঁখ বেঁধে মারধর করে। আমার বাবার রুমে কয়জন ছিলো তার জানা নেই।

তবে দূর্বৃত্তরা রাত ২টায় যাওয়ার সময় জমি বিক্রির ২০ লাখের বেশী টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। দূর্বৃত্তরা কিভাবে রুমে প্রবেশ করেছে তাও বলতে পারেন না মাসুদ।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এস. আই. হুমায়ুন কবির জানান- ময়না তদন্ত রিপোর্টে বোঝা যাবে মৃত্যুর কারণ। তবে যে ঘরে দূর্ঘটনাটা ঘটেছে, সেই ঘরে বাহির থেকে ভিতরে প্রবেশ করার কোনোরকম আলামত পাওয়া যায়নি।

বাড়িটিতে ৪ টি সিসি টিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে দূর্বৃত্তরা ক্যামেরার মেশিন থেকে হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে গেছে।

নিহতের ছোট কন্যা নুরুননেছা জানান- রাত আড়াইটার দিকে ও-ই বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার মেয়ে আমার ফোন করে জানায় যে, আপনাদের বাসায় ডাকাতি হয়েছে। আপনার ভাইকে হাত-পা বেঁধে, মারধর করে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। এবং আপনার বাবা কোন কথা বলছেন না। সংবাদ পাওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি ধর্মগঞ্জের বাসায় ছুটে আসি।

তিনি আরও জানান- বাসায় ত্রিশ লাখ টাকা ছিলো। সেই টাকা নিয়ে গেছে। বাড়ির কাজ করার জন্য ব্যাংক থেকে মাস খানেক পূর্বে এই টাকা উত্তোলন করা হয়েছিলো।

পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মাহিনুর বেগম জানান- তার স্বামী কাঁচামাল ব্যবসায়ী। প্রতিরাতে দুইটার দিকে সে কাঁচামাল সংগ্রহে বাসা থেকে বের হয়। রাত দুইটার দিকে তার ঘুম ভাঙ্গলে সে ভাড়িওয়ালার ঘরের দরজার ঠাস ঠুস শব্দ শুনতে পান। এবং গোঙ্গানীর শব্দ শুনতে পেয়ে তার স্বামীকে ঘুম থেকে ডেকে তুলেন। তখন সে দরজা খুলে দেখতে পান বাড়ীওয়ালার ফ্ল্যাটের প্রধান ফটক খোলা।

তিনি ভিতরে প্রবেশ করলে দেখতে পান বাইরের রুমের ভিতর প্রবেশ করার দুটি দরজা বাইরে থেকে আটকানো। তখন সে বাইরের ছিটকিনি খুলে দেখতে পান গামছা দিয়ে বাড়ীওয়ালার পুত্র হাফেজ মাসুদ’র হাত-পা বাঁধা। এবং অপর একটি কাপড়ের টুকরো দিয়ে মুখ বাঁধা অস্থায় ফ্লোরে পরে রয়েছে। তখন সে তার হাত-পা মুখের বাঁধন খুলে দেন। পাশের রুমে গিয়ে দেখতে পান বিছানার ওপর পরে রয়েছে নিহতের মৃতদেহ।

ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রিজাউল হক বলেন- নিহতের ১ পুত্র ও ২ কন্যা। মেয়েরা স্বামীর বাড়ি থাকেন। ছেলের পরিবারের সাথে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম নিজ বাড়িতে থাকেন। ঘটনার সময় ছেলে মাসুদ ও আব্দুল হালিম ছাড়া কেউ বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনাটি রহস্যজনক। গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চলছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *