নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্বিরগঞ্জে জালকুড়ি এলাকায় বাউলগান শুনতে গিয়ে নাসরিন আক্তার (৪০) নামে এক নারীর হাত-পা বাধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে মুল আসামী  মোঃ কমল ওরফে কুদ্দুস (৩৩) কে কুড়িগ্রামের চিলমারীর পুর্বপাড়া থেকে এলাকার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে৷ তার সহযোগী  অভির উদ্দিন (৩৫) পলাতক রয়েছে৷

সোমবার দুপুর ১ টায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাশেল। তিনি বলেন

গ্রেপ্তারকৃত আসামীর পিতার নাম আঃ জলিল, সাং-পূর্ববারা, (চিলমারীরচর), থানা-উলিপুর, জেলা- কুড়িগ্রাম। এ/পি সাং-মুনলাইট গার্মেন্টস এর পাশে, থানা-সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ। কমলের সহযোগী অভির উদ্দিন এর পিতা-চান্দু আকন্দ  সাং- হয়ভোদখা, থানা-কাউনিয়া জেলাঃ রংপুর। এ/পি সাং- মুনলাইট গার্মেন্টস এর পাশে, থানা-সিদ্ধিরগঞ্জ, জেলা-নারায়নগঞ্জ৷ 

সংবাদ সম্মেলন পুলিশ সুপার  গোলাম মোস্তফা রাসেল পিপিএমবার বলেন গত ১৯ মে সকালে  সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন জালকুড়ি পশ্চিমপাড়া শিমা ডাইংয়ের পাশে ফাঁকা বালুর মাঠে  নাসরিন আক্তার নামে এক নারীর মৃত দেহ হাত ও পা বাধা অবস্থায় পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ভিকটিমের পিতা আশরাফ দেওয়ান বাদী হযে মামলা দায়ের করেন যার নং- ৪৪ তাং ১৯/০৫/২০২৩ইং

 পুলিশের একটি দল  তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত করে  নাসরিন হত্যার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে এবং গতকাল রোববার চিলমারীতে অভিযান চালিয়ে কমলকে গ্রেপ্তার করে৷ এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে কমল স্বীকার হত্যাকান্ডর কথা শিকার করেছে।

গত ১৯ মে রাতে নাছরিন ও অভির উদ্দিন সহ জালকুড়ির পাংখা শাহ মাজারে সাপ্তাহিক ওরশের গান শুনতে যায়।পরে গান শেষে রাত অনুমান ৩ টায়  নাসরিন আক্তার (৪০) এর সাথে পরিচয় হয় তাদের পরে তারা এক সাথে চা পান করে।

চা পান শেষে অভির উদ্দিনের সাথে ভিকটিমের অর্থের বিনিময়ে একান্ত সময় কাটানোর কথা হলে ভিকটিম রাজি হয়। এর ধারাবাহিকতায় কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমকে নিয়ে একটি জরাজীর্ণ পরিত্যাক্ত ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় নাসরিনের মোবাইলে একটি ফোন কল আসে এবং সে মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাইরে  যায়।

তাৎক্ষনিক ঘরে দুই জন অন্য পুরুষ প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কমল ও অভির উদ্দিনের কাছ থেকে নগদ ৯,৪০০/- (নয় হাজার চারশত) টাকা ছিনিয়ে নেয়। এতে কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পরে। পরবর্তীতে কমল ভিকটিমকে আরো টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের সাথে আরো সময় কাটানের জন্য বলে।

নাসরিন রাজি হলে তাকে জালকুড়ি তালতলা খালপাড় বালুর মাঠে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌছালে কমলের গলায় থাকা লালসালু কাপড় দিয়ে নাসরিনের হাত বেঁধে এবং নাসরিনের গায়ের ওড়না দিয়ে দুই পা বেঁধে লালসালু দিয়ে ভিকটিমের গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

পরবর্তীতে কমল ও অভির উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ভাড়া বাসায় এসে উভয়ই গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। আসামী কমলকে গ্রেফতারের পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ঘটনার সময় আসামীর পরিহিত সাদা লুঙ্গি ও গেঞ্জি উদ্ধার করা হয়৷   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *