আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)থেকে:
রাণীদিঘী নামক পুকুর পাড় জুড়ে তৈরী হচ্ছে সারি বদ্ধ ভাবে ঘরবাড়ী। প্রত্যেক ঘরের পাশে প্রায় ৫ফিটের রাস্তা সামনে কিছু জায়গা রয়েছে আঙিনার।

লাল কালারের টেউটিনে মাথার ছাউনি করে পুকুর পাড়ের মাঝে সারি সারি বাড়ী এ যেন সৌর্ন্দযময় এলাকায় পরিণত হয়েছে। আর বাড়ীর কাজ মাঝে মাঝে এসে দেখে যাচ্ছেন স্থায়ী ভাবে জমিসহ বাড়ী পাওয়ার সুবিধাভোগীরা।

এ প্রতিবেদককে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলছেন এবার একটা মাথা গোজার ঠাঁই হলো। আর এ ঠাঁই পাওয়া এলাকাটি হলো ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার হোসেনগাঁও নন্দুয়ার ইউপির মধ্যে এলাকা বনগাঁও ছোট রাণী। এখানে প্রায় ৬৪টি বাড়ী হচ্ছে। রাণীদীঘির পাড়ের মাটি কেটে সমান করে তাতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আধা পাকা বাড়ী নির্মাণের শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ২শতাংশ জায়গা নির্ধারণ করে দুইরুম বিশিষ্ট বারান্দাসহ রান্না ও বাথরুম মিলে প্রায় ২০ ফিট দৈর্ঘ্যর ও ২২ ফিট প্রস্থের বাড়ী নির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে বাড়ীর টিন স্থাপন ও সৌর্ন্দয বর্ধন কালারের কাজ চলছে।

এ সময় সেখানে ঘুরাফেরা করা সুবিধাভোগী ইব্রাহিমের সাথে কথা হয় তিনি এ প্রতিবেদকে বলেন, গরু বেচাকেনা ব্যবসা করে পরিবার চলে। এক সময় আমি এ পাড়েই অস্থায়ীভাবে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলাম। এখন সরকার স্থায়ীভাবে বাড়ীসহ ২শতাংশ জমি আমার নামে দিচ্ছি ইতিমধ্যে তালিকা সম্পূর্ণ হয়েছে। বাড়ীর কাজও প্রায় শেষের দিকে।

কাজ শেষ হলেই আমরা স্থায়ীভাবে জমিসহ বাড়ী পাচ্ছি। এ যেন এক তৃপ্তিভরা আনন্দ। মরে গেলেও এখন শান্তি পাবো এ জন্য যে পরিবারকে একটি স্থায়ী বাড়ী দিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছি।

একইভাবে কথা হয় সু্বিধা ভোগী সফিকুলের সাথে তিনি বলেন, আমার বাবা আমাকে বসতবাড়ীর কোন জায়গা দিতে পারেনি। কারণ তারই ছিলো না। বিয়ে সাধি করে বউ নিয়ে আমি এ পুকুর পাড়েই অস্থায়ীভাবে বসবাস করছিলাম। হঠাৎ ইউএনও অফিসের লোক এসে আমাদের বলে বাড়ী ভাঙতে হবে। এ কথা শুনে আমরা ভয় পেয়ে যায়।

পড়ে তারা অভয় দিয়ে বলে এ অস্থায়ী ঘর গুলো ভেঙে আপনাদের স্থায়ীভাবে ঘর করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই আমরা আপনাদের ঘর দেব সাথে জমিও দেব। পরে কথা অনুযায়ী ঘরের কাজ প্রায় এখন শেষ। এখন স্থায়ীভাবে ঘর পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি আমরা। একইভাবে উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের বড় রাণী পুকুরও পাড়েও বাড়ী নির্মাণ হয়েছে। সেখানকার গৃহ ও ভুমিহীনরা ঘর পেয়ে চরম খুশিতে রয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা যায়, এবারের ২য় বরাদ্দে এ উপজেলায় মোট ২৯৬টি বাড়ী নির্মাণ হচ্ছে। উপজেলা প্রক্ল্প বাস্তবায়ন অফিসার সামিয়েল মার্ডি গতকাল বলেন, যথানিয়মে বাড়ীগুলো নির্মাণ হচ্ছে। খুব শিগগির ঘরগুলো প্রস্তুত হয়ে পড়বে। তখন উপজেলা প্রশাসন সুবিধাভোগীদের ঘর বুঝিয়ে দিয়ে জমির দলিলও বুঝে দেবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না গতকাল বুধবার বলেন, জমিসহ ঘর পেয়ে আমার উপজেলার গৃহ ও ভূমিহীনরা অনেক খুশি। তারা নিজেদের মাথার গোজার ঠাঁই পেয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর নিকট কৃতজ্ঞাও প্রকাশ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *