নারায়ণগঞ্জ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পৈত্রিক ভুমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভূক্তভোগী কলেজ পড়ুয়া দুই বোন।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) আড়াইহাজার এলাকায় বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
আড়াইহাজার উপজেলার মুকুন্দী এলাকার ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা মিয়ার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তাসনুভা আক্তার পারুল ও তার ছোট বোন তাবাসুম জাহান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য জানান,আমার পিতা আমার মাতা শামিমা আক্তারকে পর পুরুষের সাথে পরকিয়ায় করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরে ফেলে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত সাব জজ আদালত নারায়ণগঞ্জে একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং- ০৪/২০০০। উক্ত মামলার রায় অনুযায়ী ২০০১ সালে আমার পিতা গোলাম মোস্তফা উক্ত নারীকে তালাক দেন।

তালাক দেওয়ার পর তালাকপ্রাপ্ত এই নারীর অন্য সংসারে একটি পুত্র সন্তান হয়। আমাদেরকে শিশু অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যাওয়ার পর হইতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন অনু আমার পিতার সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমাদেরকে শিশুকাল থেকে লালন পালন, ভরন পোষনসহ লেখাপড়া, দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আমার পিতার সহায় সম্পত্তি আওয়ামীলীগের মেয়র হাবিবুর রহমান ভূয়া খারিজ করিয়া বেদখল দেন। আনোয়ার হোসেন অনু জীবন বাজী রেখে ভূয়া খারিজ বাতিল করিয়া আমাদের সম্পত্তি পুনঃউদ্ধার করিয়া আমার পিতার বরাবর দখল বুঝাইয়া দেওয়ার পর আমার পিতা সম্পত্তি বুঝিয়া পাইলে ঐ সম্পত্তির লোভে আওয়ামীলীগের এম.পি নজরুল ইসলাম বাবু ও তার স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ছত্রছায়ায় আমার পিতার তালাকপ্রাপ্ত সাবেক স্ত্রী শামিমা আক্তার আমাদেরকে কয়েকবার খুন করার পরিকল্পনা নেন। মিডিয়ার সহযোগীতায় তার হাত থেকে আমাদের জীবন রক্ষা পায়।

গত ৫ই আগস্ট ২০২৪ সালে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ ও তার ভাই রাকিবের নির্দেশে থানা বিএনপির সেক্রেটারি জুয়েল আহম্মেদ এর নেতৃত্বে পিস্তল এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়া রাত ১০ টায় আমাদের বাস ভবনে প্রবেশ করে আমাদের খুন করানোর জন্য। যার প্রমান হিসেবে ভিডিও আমার কাছে আছে। ঐ সময় আনোয়ার হোসেন অনুকে ফোন করলে তিনি আমাদেরকে ৯৯৯ এ ফোন করার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী আমরা রাত ১১ টা ১১মিনিটে ৯৯৯ এ ফোন দিলে আড়াইহাজার থানার তৎকালিন ইনচার্জ আহসান উল্লাহ রাত ১১টা ৩০ মিনিটে গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে সন্ত্রাসীদের নিয়া আবার আমাদেরকে খুন করার উদ্দেশ্যে আমাদের মেইন গেট ভাঙার চেষ্টা করে।

এরপর আমরা আনোয়ার হোসেন অনুর সহযোগীতায় থানায় উপস্থিত হইয়া অভিযোগ করিলে থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েত এর সামনে আমাদেরকে খুন করার জন্য দস্তাদস্তি করেন। এ সময় থানায় উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের সহযোগীতায় তার আক্রমন থেকে আমারা রক্ষা পাই। থানায় কোন প্রতিকার না পেয়ে আমরা ২২-০৯-২০২৪ ইং তারিখে বিশনন্দী সেনা ক্যাম্প এ অভিযোগ করিলে দায়ীত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আমাদের জান এবং মালের নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেন এবং এই নারীকে আমাদের বাড়ীর আশপাশে না আসার জন্য নির্দেশ দেন।

এভাবেই মাঝে মধ্যে উক্ত নারী স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমাদের খুন করিয়া সম্পত্তির মালিক হওয়ার জন্য আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করায় চেষ্টা করেন। আমাদের পিতা আইন মোতাবেক সহায় সম্পত্তি আমাদের দুই বোনকে লিখিয়া দেন। বর্তমানে আমার বাবার পুরো সহায় সম্পত্তির মালিক আমরা দুই বোন। আমাদের এই সম্পত্তি আত্মস্বাৎ করার জন্য আমাদেরকে প্রাণনাশ ঘটাতে পারে বিধায় সেনা বাহিনীর পরামর্শে আমরা নারায়ণগঞ্জ কোর্টে উক্ত নারীর মামলা করিলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারী করে। তার বিরুদ্ধে আমাদের নানার বাড়ির মানুষ চুরির মামলাও করে। বিতর্কীত এই নারী একাধীক মামলার আসামী। সে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত। আমাদের জান মালের কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি হইলে দায়ী থাকবেন এই নারী ও তার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা। আনোয়ার হোসেন অনুকে আমাদের থেকে আলাদা করতে পারলে তাদের পক্ষে আমাদেরকে খুন করিয়া আমাদের নামীয় সম্পদ আত্মস্বাৎ করা তার জন্য সহজ হইবে। বর্তমানে আমাদের জান মালের কোন নিরাপত্তা নাই। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের জান মালের নিরাপত্তা চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *