মেহেদী হাসান শুভ চাঁদপুর প্রতিনিধি
মতলব উত্তরে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে ৩৬ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১জনকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকিরা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেওয়ারিশ কুকুর আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার অন্তত ২০ জন ও বুধবার ১৩ জনকে পাগলা কুকুরে কামড়িয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান জুয়েল।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের রেজিস্টার থেকে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকাল থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ৩০ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বালুচর গ্রামের জেসমিন (৪৫), আদুরভিটি গ্রামের লামিয়া (৮), সাইদুল ইসলাম (১৭), মলিনা বেগম (৬৫), দেওয়ানজিকান্দি গ্রামের শারমিন (২৫), রহিমা বেগম (৫২), পাঁচগাছিয়া গ্রামের মো. শাহিন (৩০), ফতেরকান্দির আবদুল্লাহ (৩), জীবগাঁও গ্রামের মরিয়ম (৬০), জজনগরের আসমা (৪০), নিজ ছেংগারচরের তুফরা বেগম (৬০), খোকন (৪০) ও ব্র্যাক ব্যাংক কর্মকর্তা মো. কিবরিয়া।
আসমা বেগমের হাতের আঙুর কুকুর কামড়িয়ে নিয়ে গেলে সে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে, জুনাঈদের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় মহাখালি সংক্রামক ব্যাধী হাসপাতালে, তৃপ্তি আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

পৌর শহরের বাসিন্দা জেসমিন বেগম জানান, বুধবার সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় হাটতে গেলে পিছন থেকে এসে একটি কুকুর হঠাৎ করে পায়ে কামড়ে ধরে। অনেক চেষ্টা করেও রক্ষা করতে না পারায় এলাকায় লোকজন এসে কুকুরকে ধাওয়া দিয়ে আমাকে রক্ষা করেন। এতে আমার পায়ের গোড়ালি প্রায় ছিঁড়ে গেছে।

আট বছরের শিশু লামিয়ার বাবা জানান, বুধবার বাড়ির পাশে বসে খেলার সময় একটি কুকুর এসে কামড়িয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত করে রক্তাক্ত করে ফেলে। লামিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে মাংস তুলে ফেলে। এ সময় লামিয়ার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে রক্ষা করে। আশপাশের লোকজন না থাকলে কুকুরের হাত মেয়েকে বাঁচানো সম্ভব হতো না বলে জানান তিনি।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, গত দুই দিনে মতলব উত্তর উপজেলা বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকে কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে হাসপাতাল চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান জানিয়েছেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী কুকুর নিধন দÐনীয় অপরাধ। সেক্ষেত্রে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন প্রদানের মাধ্যমে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই অতি শিগগিরই পৌরসভা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক ডেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আলোচনা করে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *