মোঃ সেতাউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিএনএফ ব্যবসায়ী হারুণ। টিন সেডের একটি বাড়ি কিনেছেন নগরীর রানীবাজারের মিয়াপাড়া এলাকায়। তারপর থেকেই বাড়ী মালিক হারুণের কাছে নামে বেনামে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ২ লাখ চাঁদা নিয়েছিলেন আওয়ামীলীগের দুই নেতা।
পরবর্তীতে আবারো ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা। চাঁদা না পেয়ে ওই দুই আওয়ামী লীগ নেতা বাড়ি ভাংচুর ও মালামাল সব লুটপাট করেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী হারুণ।
এনিয়ে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মোসাদ্দেক হোসেন লাভলু ও আহসান হাবীব ওরফে হাসান নামের দুই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছেন ভুক্তভোগী হারুন অর রশীদ।
অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, রাণীবাজার মিয়াপাড়া এলাকায় নিজের টিনশেড বাড়িতে তিনি ছাদ নির্মাণ করছেন। কিন্তু তাতে বাধা দিয়ে প্রথম ধাপে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতা লাভলু ও হাসান। বাধ্য হয়ে তিনি তাদের ২ লাখ টাকা দিয়ে নির্মাণকাজে হাত দেন। এরপর গত ৩০ এপ্রিল সকালে লাভলু ও হাসান জোর করে তার বাড়িতে প্রবেশ করেন। তারা আরো দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তিনি এবার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে বাড়ি ভাংচুর চালিয়ে ৪ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করেন হামলাকারীরা।
নগরীর ১২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে রয়েছেন আহসান হাবীব হাসান। চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবীব ওরফে হাসান। চাঁদা আদায়, চাঁদা না পেয়ে ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তার।
তবে ওই এলাকার স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির কাছে থেকে জানা গেছে, ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা আহসান হাবীব ওরফে হাসানের নামের এমন একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তিনি এমন চাঁদাবাজি ও ভূমিদস্যূতার সাথে জড়িত। শুধু তাই নয়, এই আ.লীগ নেতা হাসান বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম ভাঙ্গিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়েছেন। রাজনৈতিক সান্নিধ্য ও প্রশাসনে সখ্যতা থাকার কারণে সবাই ভীত। কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারেন না।
এদিকে, মোসাদ্দেক হোসেন লাভলুও একই এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার পর বর্তমানে তিনি নগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটিতে সদস্য পদে রয়েছেন। তবে তিনি দাবি করছেন, বাড়িটির মালিক তিনি নিজেই। সেটি তার কেনা সম্পত্তি। এবিষয়ে পুলিশের সাথে তার কথাও হয়েছে।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ বালিয়াদীঘি এলাকার বাসিন্দা ভুক্তভোগী হারুন অর রশীদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবৎ তারা বিভিন্ন উপায়ে আমার কাছে থেকে জোরপূর্বক চাঁদাবাজি করেছেন। কিন্তু অন্য জেলার মানুষ হওয়ায় তারা স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে দিনের পর অন্যায় করছেন।’
তিনি বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল বাসায় জোরপূর্বক ঢুকে চাঁদা দাবি করলে না দেওয়ায় তারা আমার মারধর করে এবং বাড়ির অনেক আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যান। তাদের অত্যাচারে রাজশাহী ছেড়ে বাধ্য হই। কিন্তু যখন তারা বাড়িটিই দখলদারিত্ব দাবি করেন তখন বাধ্য হয়ে এসে থানায় অভিযোগ দিতে বাধ্য হই।’
ভুক্তভোগী হারুণের অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারন চন্দ্র বর্মন বলেন, ‘এনিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। এরই মধ্যে পুলিশ সেটির তদন্ত শুরু করেছে। এনিয়ে খুব দ্রুতই একটি আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।