আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

টার্গেট ছিল চুরি। চুরি করতে গিয়ে ঘটায় হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা গেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে রামরাই দিঘির পাশে ভুট্টার জমি থেকে নিখোঁজের পাঁচদিন পর গত শনিবার (৪ মার্চ) অটোরিকশা চালক সাইফুল (১৪) নামে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত সাইফুল প্বার্শবর্তী হরিপুর উপজেলার দামোল গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে।

এ ঘটনায় একটি মামলা হয়। মামলাটি থানা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআইসহ একাধিক সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনার ৯ দিনের মধ্যে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজনকে বুধবার (১৫ মার্চ) রাতে হরিপুর ও রাণীশংকৈল থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে ।

বৃহস্পতিবার সকালে আটককৃতদের
আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

আটককৃতরা হলেন রাণীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়ার সিংহোর গ্রামের রবিউল আউয়ালের ছেলে আব্দুল কাদের (২৮) হাড়িয়া গ্রামের সারোয়ার হোসেনের ছেলে সাদেকুল ইসলাম ওরফে মোজাম্মেল হক মজু (২৬) ও একই উপজেলার গোগর গ্রামের জবেদ আলীর ছেলে সজল (২৪)।

পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন যাবত তারা হরিপুর ও রাণীশংকৈলসহ আশপাশের উপজেলায় ইজিবাইক অটোরিকশা ভ্যান চুরি করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাণীশংকৈল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয় । পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই সাইফুলকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

রানীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গুলফামুল ইসলাম মন্ডল জানান, হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে হরিপুর ও রাণীশংকৈল থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেন।
পরে তাদের হরিপুর থানা পুলিশ রাণীশংকৈল থানা পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। গ্রেফতারকৃতরা আন্তঃজেলা ইজিবাইক চোরদলের সক্রিয় সদস্য।

উল্লেখ্য..
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর থেকে সাইফুল ইসলাম (১৪) নামে এক কিশোর নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। কিন্তু এর পাঁচ দিন পর গত শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে রাণীশংকৈলের ভুট্টা খেত থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

ভুট্টা খেতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ পড়ে আছে-এমন খবর পেয়ে শনিবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। শুরুতে লাশ শনাক্তে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। নিহত হওয়ার বিষয়ে তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চালান।

পুলিশ জানায়, স্থানীয়রা রাণীশংকৈল উপজেলার রামরায় দিঘির পাশে একটি ভুট্টা খেতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই যুবকের লাশ পরে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

দামোল গ্রামের নুরুল ইসলাম খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে ছুটে যান এবং পুলিশের নিকট দাবী করে ৬ই মার্চ হারিয়ে যাওয়া সাইফুলের এটা লাশ । জিডি মুলে অন্যান্য তথ্য জানার পর পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করেন।

নিহতের স্বজনরা জানায়, অটোরিকশা নিয়ে হরিপুর থেকে রাণীশংকৈল যায় সাইফুল। এরপর থেকে সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি হরিপুর থানায় জিডি করা হয়। এর পাঁচ দিন পর শনিবার(৪ মার্চ)
তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, নিখোঁজের পর থানায় জিডি করা হয় তাকে জীবিত উদ্ধারের জন্য। অথচ জিডির কোন গুরুত্ব দেয়নি পুলিশ। যদি গুরুত্ব দিতো পুলিশ, তাহলে হয়তো সাইফুলকে জীবিত পাওয়া যেতো। সাইফুলকে যারা হত্যা করেছে তাদের শাস্তি দেয়ার দাবি পরিবারের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *