আনোয়ার হোসেন আকাশ,
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় গাছে বেঁধে নাসিরুল (২৪) নামে এক যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হওয়ায় স্থানীয় সাংবাদিক মাহবুবসহ পাঁচজনের নামে আদালতে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে। বুধবার (০৬ অক্টোবর) রাতে রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার ভাংবাড়ী গ্রামের করিমুল বাদী হয়ে ঠাকুরগাঁও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- রাণীশংকৈল উপজেলার ভাংবাড়ী গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে নাসিরুল ইসলাম (২৪), রিয়াজুল ইসলামের ছেলে রুবেল আলম (২৪), ভাংবাড়ী দক্ষিণপাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে সাংবাদিক মাহাবুব আলম (২৪), মৃত মুনির উদ্দীনের ছেলে দবিরুল ইসলাম (৪০) ও মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে হবিবর রহমান (৪৮)।

জানা যায়, রাণীশংকৈল উপজেলার ভাংবাড়ী গ্রামের করিমুল ইসলামের মেয়ের সঙ্গে একই গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে নাসিরুলের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক থাকায় তারা গোপনে বাড়ি থেকে পালিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে বিয়ে করেন। কয়েকদিন পর উভয় পরিবারের উদ্যোগে তাদেরকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। এদিকে ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে বউয়ের সঙ্গে দেখা করতে শ্বশুরবাড়ি যান নাসিরুল। এ সময় মেয়ের বাবা-মা নাসিরুলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে। অবশেষে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

এই ঘটনার একটি ভিডিও গত ২৩ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে ভাইরাল হলে রাণীশংকৈল থানা পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৪ সেপ্টেম্বর মেয়ের মা সেলিনাকে গ্রেফতার করে। সেদিন নাসিরুলের বাবা পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ গত ২৭ সেপ্টেম্বর মূল আসামি করিমুলকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের এক দিন পরেই আসামি জামিনে বের হয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ পাঁচজনের নামে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেছেন।

দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার রাণীশংকৈল উপজেলা প্রতিনিধি মাহবুব আলম বলেন, নির্যাতনের ঘটনাটি আমি সকল সাংবাদিকদের জানিয়েছি ও ভিডিও ভাইরাল করেছি এটা মনে করেই মেয়ের বাবা আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এটা একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও হয়রানিমূলক মামলা। এখানে তারা যাদের সাক্ষী করেছে তারা সবাই তাদের পরিবারের।

এ বিষয়ে রাণীশংকৈল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, কোনো কারণ ছাড়া একজন সাংবাদিককে ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের ঘটে যাওয়া ঘটনা সবার সামনে তুলে ধরা। সেটি করতে যাওয়ায় মাহবুবের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হলো। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *