নিজস্ব সংবাদদাতাঃ
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি রাষ্ট্র ও সমাজে জীবনের উপর ব্যক্তির অধিকার, আইনের আশ্রয় পাওয়ার অধিকার ও সর্বোপরি আইনের শাসন নিশ্চিত করতে ১৭ আগস্টের ” সন্ত্রাস বিরোধী দিবসে ” সকল প্রকার বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ ও সন্ত্রাসীদের গডফাদারদের বিচারের আওতায় আনার দাবিতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দৃঢ় আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়ে ১৭ আগষ্ট (বুধবার) বিকাল ৫ টায় নারায়ণগঞ্জ চাষাঢ়াস্থ শহীদমিনার প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড হাফিজুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কমরেড গোলাম মোস্তফা সাচ্ এর সঞ্চালনায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম নেতা ও জেলা কমিটির বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক কমরেড হিমাংশু সাহা, কমরেড এইচ রবিউল চৌধুরী, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের জেলা সভাপতি হুমায়ূন কবির, বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক যুবনেতা মাঈন উদ্দিন বারী, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর জেলা সংগঠক রায়হান শরীফ, মোঃ মাসুম আহমেদ, মোঃ অহিদুজ্জামান প্রমুখ।
বক্তার বলেন, ১৯৯২ সালের এই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে অজ্ঞাত আততায়ীদের হাতে গুলীবিদ্ধ হয়েছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি।

ঐ হত্যাপ্রচেষ্টার ৩০ বছর পার হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত তার বিচার হয়নি। বিএনপি সরকার ও তার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দলমত নির্বিশেষে প্রতিবাদ – প্রতিরোধের প্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আততায়ীদের ও তার পিছন পর্দার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে বিচারে প্রতিশ্রুতি দিলেও একটা নামকায়াস্তে তদন্তের মাধ্যমে কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে চার্জশীট করলেও তার ঐ শাসনামলে ও পরবর্তীতেও তাদের কথিত ঐ বিচার হয়নি। ঐ সময়কালেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাসমূহে অব্যাহত সন্ত্রাসী, হত্যা-হামলার ঘটনার ধারাবাহিকতায় চুয়াডাঙ্গার ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা রমজান, মকলেস, সোহরাব, কুলবিলা গুচ্ছগ্রামের উজীর, মুরাদ, আাসানুর, শমসের, আখের আলী, কাওসার, পুটু, নাসির আটজন ভূমিহীন খেতমজুর নেতা, মেহেরপুরের জহির, ঝিনাইদহের মন্টু মাস্টারসহ যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাদের হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। বিচার হয়নি ২০০১ সালে চারদলীয় শাসনামলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পার্টির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য কমরেড রফিক খান হত্যার।

বহু চেষ্টার পর নাটোরের লালপুর আখচাষী নেতা সালামের হত্যার বিচারকার্য সম্পন্ন করা গেলেও ঐ হত্যার পিছনের ষড়যন্ত্রকারীরা অধরাই রয়ে গেছে। বরং ঐ সন্ত্রাসীদের গডফাদাররা রাজনীতি ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত এবং অবাধে বিচরণ করছে।
বক্তারা আরো বলেন, এই ভাবে যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত থাকে তাহলে দেশকে সোনার বাংলার প্রকৃত রুপে দেখার পরিবর্তে সাম্প্রদায়িক এবং মৌলবাদকে আরো বেশি মাত্রায় প্রশ্রয় দেয়া হবে ; যা বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক রাস্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বলে মনে করা হয়।

সকল হত্যার প্রকৃত বিচার দাবির পাশাপাশি বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য প্রত্যাহার করার দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, এমনিতেই দ্রব্যমূল্য উর্ধগতিতে নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা ; তার উপরে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি যেন মরার উপর খড়ার ঘা। এমন পরিস্থিতিতে সরকারকে অনতিবিলম্বে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য উর্ধগতিরোধ করে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনারও জোর দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *