সুমাইয়া আক্তার শিখা স্টাফ রিপোর্টার
অনেকটা অভিমান নিয়েই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন কুষ্টিয়ার ক্রীড়াঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র মিন্টু দত্ত। ১৯৬৬ সালের ২জানুয়ারী কুষ্টিয়া শহরের এন এস রোডের (থানাপাড়া অংশ) ঐতিহ্যবাহী দত্ত পরিবারে বৈদ্যনাথ দত্ত ও মনোরমা দত্ত দম্পতির কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন মিন্টু দত্ত। ৭ভাই ও ৩বোনের মধ্যে মিন্টু দত্ত চতুর্থ। ছোটবেলা থেকেই পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে খেলাধুলার সঙ্গে জড়িয়ে যান মিন্টু দত্ত।

মিন্টু দত্ত ১৯৮২-১৯৯২ সাল পর্যন্ত ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে ক্রীড়াঙ্গনে ছিলেন। সেই সময় তিনি কুষ্টিয়া জেলা ফুটবল দলের হয়েও খেলেছেন। তিনি কুষ্টিয়া জেলা হ্যান্ডবল দলের প্রতিষ্ঠাতা। শুধুমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে মিন্টু দত্ত থেমে থাকেননি, জড়িয়েছেন রেফারি হিসেবেও। ১৯৯২ সাল পরবর্তীতে আমৃত্যু মিন্টু দত্ত জাতীয় রেফারি হিসেবে ফুটবল, হ্যান্ডবল ও ভারোত্তোলন খেলার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক ভারোত্তোলন খেলার রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

খেলাধুলার বাইরে মিন্টু দত্তের অভিনয় জগতেও চলাফেরা ছিলো নিয়মিত। মঞ্চনাটক থেকে শুরু করে টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি। একজন স্বনামধন্য নাট্যকর্মী ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসাবে কুষ্টিয়ার মানুষের কাছে পরিচিত মুখ তিনি।

ক্রীড়াঙ্গন ও নাট্যাঙ্গনের প্রিয় মুখ মিন্টু দত্ত অনেকটা অভিমান নিয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে ৯এপ্রিল ২০২১ ইং তারিখ বিকাল সাড়ে পাঁচটার সময় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। প্রিয় এই মানুষটির মৃত্যুতে কুষ্টিয়ার ক্রীড়াঙ্গন ও নাট্যাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার সাথে সাথে তাকে শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য তাদের এন এস রোডের বাড়িতে পরিচিতজন, সহকর্মী, সহযোদ্ধা, আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের ঢল নেমেছে। ব্যক্তিগত জীবনে মিন্টু দুই পুত্র সন্তানের জনক।

ক্রীড়াঙ্গন ও নাট্যাঙ্গনের প্রিয় মুখ মিন্টু দত্তের মৃত্যুতে, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস, সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়া ইমন রুবেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক অঞ্জন কৃষ্ণ শীল (শুভ) গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় মিন্টু দত্তের আত্মার শান্তি কামনা ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।

মিন্টু দত্তের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মিন্টু দত্ত দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকা অবস্থায় কোন সংগঠন বা সংস্থাসহ কেউ তার সহযোগীতায় এগিয়ে আসেনি। অনেক অবহেলা আর অভিমান নিয়েই চিরবিদায় নিয়ে চলে গেলেন তিনি ।সকাল ১১টায় কুষ্টিয়া মহাশ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *