আনোয়ার হোসেন আকাশ
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে বনের জমি দখলের মহোৎসব থামছেই না। প্রায় পাঁচশ’ একর জমি বেদখল হয়ে গেছে।

উপজেলার ফরিঙ্গাদিঘী, কাশিপুর, ধর্মগড় ও বাহেরপাড়াসহ অন্য বনভূমির মোট ৫১৯.৩২ একর জমির ৫০০ একর জমি দখলে নেই বনবিভাগের। বেদখলে থাকা এসব বনভূমি উদ্ধারেরও তৎপরতা নেই কর্তৃপক্ষের। এখন দখলদাররাই হয়ে গেছেন বনের ‘মালিক’।

পাঁচশ’একর বনভূমি এখন দখলদারদের হাতে। রাতের আঁধারে একের পর এক গাছ কেটে বনের এসব জমি দখল করে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। গড়ে তোলা হয়েছে বসতবাড়ি, দোকান পাটসহ নানা স্থাপনা। বন কর্তৃপক্ষ বলছে, আইনী জটিলতা আর রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে উদ্ধার করা যাচ্ছে না বনের এসব দখলি জমি।

১৯৮৫ সালের পর থেকে, বনের দখলী জায়গা উচ্ছেদের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকের হাতে। খোদ বন কর্তারা ও স্থানীয়রা বলছেন, জনবলের অভাব ও স্থানীয় প্রভাবে বেহাত হচ্ছে বনের জমি।
তবে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার আশ্বাস দিলেন দিনাজপুরের সহকারী বন সংরক্ষক
। বনভূমি দখলমুক্ত করতে প্রশাসন ও বন বিভাগের জোর তৎপরতা প্রয়োজন, অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী বন সংরক্ষক (দিনাজপুর) নূরুন্নাহার জানান, এসব জমি তো অনেক আগেই বেদখল হয়ে গেছে। আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। তারপরও বনভূমির জমি উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া বন কর্মকর্তারা দখলকারীদের চিহ্নিত করে তালিকা প্রণয়ন করেছে।

স্থানীয়রা বলেছেন বনবিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে বন উজাড় করে সেখানে সামাজিক বনায়নের নামে কৃষিকাজ, আম বাগান ও স্থায়ী আধাপাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছে অনেকেই। বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে প্রতিনিয়তই কাটা হচ্ছে গজারি শালসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। রাতদিন সমানতালে চলছে বননিধন। এক সময় যেখানে গভীর অরণ্যে ও দিনের আলোয় চলাচল করার সাধ্য ছিল না, সেখানে পরিণত হয়েছে লোকালয় ও ফসলি জমিতে। এক্ষেত্রে লোক দেখানো
দায় সারাভাবে বনবিভাগ ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও প্রভাবশালীরা রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।

বন কর্মকর্তাদের দুর্নীতি এবং বিভিন্ন স্তরের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতার দাপটে এসব বনভূমি বেদখলে চলে গেছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

তবে বনবিভাগের দাবি, অবৈধভাবে দখলকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান বলেন, বনবিভাগের তো আলাদা দপ্তর রয়েছে। উদ্ধারের বিষয়ে যদি তারা আমাদের সহযোগিতা চায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *