নিজস্ব সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ:
নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ’র স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমন্ত্রিত হওয়ার নৈতিক যোগ্যতা রাখেন না। বরং নরেন্দ্র মোদি’র মতো উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি বাংলাদেশ’র স্বাধীনতার এই মাইলফলকে উপস্থিত থাকা স্বাধীনতার মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) বিকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বর্ণাঢ্য র‌্যালী পূর্বক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান এসব কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, মুসলমানের কাছে ইসলাম নিজের জীবনের চেয়েও প্রিয়। এদেশে ইসলাম টিকে থাকলে স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে। ইসলাম না থাকলে স্বাধীনতাও থাকবে না। ইসলামের উপর ভিত্তি করেই দেশ স্বাধীন হলেছিল। এখন যারা ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দিতে চায় দেশের স্বাধীনতায় তাদের কোন অবদান ছিল না।

তিনি আরও বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ ও দলমতের প্রবল বিরোধীতা সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদিকে সুবর্ণজয়ন্তীর আমন্ত্রনে দেশের স্বাধীনতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী কারো ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান নয়। মোদিকে এনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে কলঙ্কিত করা হবে। সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়ায় ফেলানীর লাশের রক্তে যার হাত রঞ্জিত সেই মোদির আগমন জনগণ মেনে নিবে না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুহা. নুর হোসাইন’র সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক বিলাল খান’র সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, নগর সহ-সভাপতি শাহাদাত হোসাইন খান, সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক, মাও. শামসুল আলম, অর্থ সম্পাদক আমির হোসাইন, সহ-প্রচার সম্পাদক ফারুক হাওলাদার, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক আ. রহমান রোমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সভাপতি মুহাম্মাদ বিল্লাল হোসেন, বন্দর থানার সভাপতি আবুল হাশেম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর সহ-সভাপতি নেকমত আলী দেওয়ান, ইসলামী যুব আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি ডা. মিজানুর রহমান, ইশা ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগর সহ-সভাপতি মাহদী হাসান প্রমূখ।

প্রধান অতিথি বলেন, মেহমানকে আপ্যায়ন করা ইসলামের রীতি। এমনকি সে যদি আপন পিতার হত্যাকারীও হয় তবুও। এটা ইসলামের সৌন্দর্য্য। সে হিসাবে বাংলাদেশে আমন্ত্রিত সকল বিদেশী মেহমানদের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ স্বাগত জানায়। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’র বিষয়টি আলাদা। তার অতীত সহিংস এবং ক্ষমতা গ্রহণের পরে ভারত জুড়ে তিনি যে ধর্মীয় সহিংসতা উস্কে দিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশে তাকে স্বাগত জানানোর মতো কোনো পরিবেশ নেই। নরেন্দ্র মোদি ভারতে বৈষম্য, সংখ্যালঘুদের উপর যে অত্যাচার, নিপীড়ন এবং ধর্মীয় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মানুষকে পিটিয়ে মারা, কাশ্মীর’র মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া এবং সিএ-এর মতো বর্ণবাদী আইন করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ভারতে বসবাস করা মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার মতো কাজ করছে।

সভাপতি নূর হোসেন বলেন, বাংলাদেশ’র সীমান্তে প্রতিনিয়ত মানুষ হত্যা, বাংলার মানুষের প্রাপ্য পানি নিয়ে অবৈধ কারসাজী, কুটকৌশলের মাধ্যমে বাংলাদেশ’র প্রতিকূলে বাণিজ্য ঘাটতী জিইয়ে রাখা, রোহিঙ্গা ইস্যু আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ’র বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং আগ্রাসী বিনিয়োগ করে বাংলাদেশকে দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের কারণে নরেন্দ্র মোদিকে বাংলার মানুষ স্বাগত জানাতে পারে না।

উল্লেখ্য, আলোচনা সভা শেষে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশাল বর্ণাঢ্য র‌্যালী ১নং গেইট হতে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান সড়ক ২নং গেইট হয়ে চাষাঢ়া প্রেস ক্লাব এসে শেষ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *