নিজস্ব সংবাদদাতা: পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল উপলক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী আল-আবেদী (মাঃ জিঃ আঃ) এর সভাপতিত্বে ও নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন সংলগ্ন হইতে পবিত্র জশনে জুলুস ঈদ-এ-মিলাদুন্ননবী (দঃ) উদযাপন কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ হিজবুর রাসুল (দঃ) নারায়ণগঞ্জ জেলা ও বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম’আত নারায়ণগঞ্জ জেলার সহযোগিতায় বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম জশনে জুলুস শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (০৯ অক্টোবর) সকালে এ বৃহত্তম জশনে জুলুস শোভাযাত্রা শেষে ধর্মীয় আলোচনা ও আখেরী মোনাজাতে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের সকল মানুষের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

পবিত্র জশনে জুলুস ঈদ-এ-মিলাদুন্ননবী (দঃ) এর শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু সড়ক হয়ে চাষাঢ়া, ডনচেম্বার, কালিরবাজার, টানবাজার হয়ে পুনরায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে শোভাযাত্রাটি সমাপ্ত হয়। অতঃপর আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী আল-আবেদী আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন।

আখেরী মোনাজাতের পূর্বে সমাবেশে তিনি বলেন- পবিত্র ১২ই রবিউল আউয়াল সমস্ত সৃষ্টির জন্য রাহমাতাল্লিল আলামিন হিসেবে আমাদের প্রিয় নবী (দঃ) দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। আমাদের সমস্ত আলেমের জন্য রহমত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন- “তোমরা আমার অনুগ্রহ বা রহমত প্রাপ্তিতে খুশী উদযাপন কর।” আহল সুন্নতে ওয়াল জাম’আত অনুসারীরা সকলইে এই দিনে খুশী উদযাপন করে জশনে জুলুস শোভাযাত্রা, মলিাদ মাহফিল এবং দান-ছদকা করে থাকেন। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম জশনে জুলুসে পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (দঃ) শোভাযাত্রা প্রতিষ্ঠা করেছেন পঞ্চদশ শতাব্দীর মোজাদ্দেদী রাসূল পাকের ৪০তম বংশধর আওলাদে রাসূল আল্লামা সৈয়দ আবেদ শাহ্ মোজাদ্দেদী আল-মাদানী (রাঃ)। তারই ধারাবাহিকতায় সারা বাংলাদেশ পবিত্র জশনে জুলুস ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (দঃ) উদযাপন করে থাকে। রাসূল পাক (দঃ) এর আগমনে একমাত্র কান্না করেছিল ও অখুশী হয়েছিলেন ইবলিশ শয়তান। বর্তমানে কিছু মুসলমান নামধারী আলেম ওলামাগণ ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (দঃ) এর খুশী উদযাপনের বিরুদ্ধে ফতুয়া দিয়ে থাকে মূলত তাঁরাই ইবলিশ শয়তানের অনুসারী।

তিনি আরও বলেন- বাংলাদেশ সহ বিশ্বে যাঁরাই ইসলাম ধর্মকে ব্যবহার করে জঙ্গীবাদের সাথে সম্পৃক্ত তাঁরা সকলেই মিলাদুন্নবী (দঃ) বিরোধীতাকারী ওহাবী আকিদায় বিশ্বাসী, তাদের থেকে মুসলমান জাতিকে দূরে থাকতে হবে। রাসূল পাক (দঃ) দুনিয়ার বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে গিয়েছিলেন তার উত্তম চরিত্র ও আদর্শের মাধ্যমে। বর্তমানে এই অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সর্বস্তরে রাসূলে পাক (দঃ) এর আদর্শ অনুসরণ ও অনুকরণ করাই হচ্ছে একমাত্র শান্তি এবং মুক্তির পথ। তাই সমস্ত মানব রচিত মতবাদকে ভুলে গিয়ে মসজিদ থেকে সংসদ পর্যন্ত রাসূলে পাক (দঃ) এর আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদীবাদ এবং পশ্চিমা বিশ্ব সহ সমস্ত ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ হওয়া অত্যন্ত জরুরী। বাংলাদেশে তথা বিশ্বের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় মদিনা সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সকলকেই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্র সর্বদা সোচ্চার, তাই স্বাধীনতার স্বপক্ষে শক্তির ঐক্যবদ্ধভাবে থেকে এদেশের চলমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট মোকাবেলায় একত্রিত ভাবে কাজ করে যেতে হবে।

উক্ত জশনে জুলুস ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (দঃ) শোভাযাত্রা ও আখেরী মোনাজাতের সময় উপস্থিত ছিলেন- চাঁদপুর হাজীগঞ্জ ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের পীরজাদা আওলাদে রাসূল সৈয়দ মাহমুদ শাহ্ মোজাদ্দেদী আল-আবেদী, জশনে জুলুস ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (দঃ) উদযাপন কমিটি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফ হোসেন, সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব সানোয়ার হোসেন, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ হিজবুর রাসূল (দঃ) নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওয়াহিদুর রহমান ডাবলু, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আমানতউল্লাহ আরমান খন্দকার, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এ. এম. এম. একরামুল হক, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন কাওছার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ তরিকুল হাসান লিংকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুদ্দিন, ইসলামী ছাত্রসেনা নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মোঃ রাহাত হাসান রাব্বী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রিদুওয়ানুল ইসলাম নিবিড়, ইসলামী ছাত্রসেনা নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি গোলাম মোস্তফা নীরব, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সানি দেওয়ান সহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার মসজিদ ও মাদ্রাসার আলেম ওলামাগণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *