নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে উত্তর আজিবপুর (আউলাবন) এলাকায় হেলাল নামে সাজাপ্রাপ্ত এক আসামি গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালিয়েছিলো পুলিশ।

পুলিশের অভিযানকে কেন্দ্র করে আসামি পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষ বাদির স্বজনদের উপর হামলা চালায়। হামলায় আসলাম নামে এক যুবক গুরুতর আহত হয়ে জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
এদিকে এ হামলার ঘটনায় মামলা করে আতংকে দিনাতিপাত করছেন আহত ওই যুবক ও তার স্বজনরা। অপরদিকে যারা ওই যুবকের উপর হামলা চালিয়েছে তারাই উল্টো মামলা করেছে দুটি। তার মধ্যে একটি থানায় অপরটি আদালতে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগি যুবক ও তার পরিবাররা নাসিক ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের শরনাপন্ন হলেও তিনি বিভিন্ন অযুহাতে সময় ক্ষ্যাপন করে কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে তারা জানান।

এ ঘটনায় ওই পরিবারটি পুরো আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন এবং সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন হুমকি ও মহড়ায় জীবন শংকায় রয়েছেন। পড়েছেন বিপাকে। এর সুষ্ঠু সমাধান ও বিচারের আশায় নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র, কাউন্সিলর থানা পুলিশসহ বিভিন্ন মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসলাম ও তার পরিবার।

জানাযায়, সাজাপ্রাপ্ত আসামী হেলাল আউলাবন এলাকার কবিরের ভাই। তার বিরুদ্ধে এক যুগ আগে মামলা করেন তারই স্ত্রী আমেনা বেগম। সেই মামলার পলাতক আসামি হয়ে বিদেশ ছিলেন দীর্ঘদিন। পরে মামলাটির রায়ে আদালত তাকে সাঁজা প্রদান করে। সম্প্রতি সে দেশে আসার পর ঈদুল আযহার ৩য় দিন মঙ্গলবার পুলিশকে জানায় আমেনা। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই পালিয়ে যান তিনি।

পুলিশের এ অভিযানকে কেন্দ্র করে ক্ষিপ্ত প্রতিপক্ষের উপর অতর্কিত হামলা চালায় কবির হোসেন ও আসামী পক্ষের সদস্যরা। হামলায় বাদির খালাতো ভাই আসলাম (৩০) গুরুতর রক্তাক্ত আহত হয়। তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় আঘাত করলে তা মুখে লেগে নিচের পাটির একটি দাত ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে যায়। এছাড়াও আরো কয়েকজন নারী পুরুষ আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় পরের দিন বুধবার আহত আসলামের মা বাদী সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৬ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন মামলা নং- ১৭(৭)২২। এজাহার নামীয় আসামীরা হলো, উত্তর আজিবপুর পুর (আউলা বন) এলাকায় মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মো: মাসুম (৩৫), শুভ (২৮), আটিগ্রাম এলাকার মৃত আঃ জব্বারের ছেলে মোঃ লাট মিয়া ওরফে লাড্ডু (৫০), তার ছেলে পারভেজ (৩৫) ও বিপ্লব (২৮), উত্তর আজিবপুর পুর (আউলা বন) এলাকায় মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে কবির হোসেন (৪৫) সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৩ জন।

গুরুতর আহত আসলামের খালাতো বোন আমেনা খাতুন বলেন, ১৫ বছর আগে হেলালের সাথে আমার বিয়ে হয়। আমাদের ১৪ বছরের একটা ছেলে আছে। ওই সময় থেকে সে আমাদের দেখভাল করে না। তখন আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলার করার পর সে বিদেশ পালিয়ে যায়। পরে তার অনুপস্থিতেই আদালত মামলার রায় দেন। রায়ে হেলালের ৫ বছরের সাঁজা প্রদান করা হয়।

সম্প্রতি সে বিদেশ থেকে দেশে আসে। আমি খবর পেয়ে পুলিশকে খবর দেই। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই ওর ভাই কবির ওরে সড়িয়ে দেয়। কারণ ওর ভাই কবির পুলিশের লোক হিসাবে এলাকায় অনেক পরিচিত।

এরপর পুলিশ আসছে কিন্তু হেলালকে পায় নাই। পুলিশ যাওনের পর দলবল নিয়া আমার খালাতো ভাইয়ের বাড়ির সামনে যায়। এরপর সেখানে আমার ভাইরে পাইয়া মাইরা দাঁত ভাইঙ্গা দিছে। সাঁজা প্রাপ্ত আসামীগো এতো ক্ষমতা কেন ? দেশে কি আইন নাই!। আমি এর বিচার চাই।

এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় কাউন্সিলরের ছত্রছায়ায় কবির হোসেন গং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এই গংদের বিরুদ্ধে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একাধিক অভিযোগ থাকলেও পুলিশ প্রশাসন কোন ব্যাবস্থা গ্রহন না করায় এলাকার সাধারন মানুষ আতংকে জীবন যাপন করছে।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, সব মামলায় আসামি গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় না। মামলার গ্রাউন্ড দেখতে হবে। তদন্ত করে অভিযুক্তরা পকৃত দোষী কিনা তা নিশ্চিত হতে হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আইন অনুযায়ী সে ব্যবস্থা নিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *