আলিফ হোসেন,তানোরঃ

রাজশাহীর তানোরে সনাতন ধর্মালম্বী যুবক আলোচিত প্রকাশ কুমার(১৯) হত্যার ক্লু উদঘাটন করেছেন তানোর থানা পুলিশ। চাচির পরকীয়া জেনে যাওয়া খুন হয়েছে প্রকাশ কুমার (১৯)।
ছয় দিনের মাথায় ক্লুলেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে তানোর থানা পুলিশ। জানা গেছে, এই ঘটনায় গ্রেফতার হয় নিহতের চাচা উপজেলার এনায়েতপুর চোরখৈর গ্রামের বাসিন্দা বিমল সিং (৫০), তার স্ত্রী অঞ্জলী রাণী (৩৫) ও তাদের বড় ছেলে সুবোধ সিং (১৮) এবং অঞ্জলী রাণীর পরকীয়া প্রেমিক নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার সাদাপুর খরিবাড়ি এলাকার বাদল (৪৫)।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন এরা।
এনিয়ে রাজশাহীর আদালতে পৃথক-পৃথকভাবে জবানবন্দিও দেন গ্রেফতারকৃত চার আসামি। গত ২৮ এপ্রিল রাতে প্রকাশ কুমার উপজেলার কলমা ইউনিয়নের এনায়েতপুর চোরখৈর গ্রামের নির্জন রাস্তায়খুন হন প্রকাশ। পরদিন সকালে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত প্রকাশ ওই গ্রামের নির্মল সিং এর ছেলে। রাজশাহী নগরীর মিষ্টি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নবরূপের কর্মী ছিলেন তিনি। লকডাউনে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ থাকায় নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি। এনিয়ে ২৯ এপ্রিল সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা। মামলা নম্বর- ২৬।

তানোর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, মামলার প্রধান আসামিসহ খুনের সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, বিমল সিং এর স্ত্রীর সঙ্গে তিন বছর ধরে পরকীয়া চলছিল পার্শ্ববর্তী নিয়ামতপুর উপজেলার সাদাপুর খরিবাড়ি এলাকার রাজমিস্ত্রী বাদলের। স্বামীর অবর্তমানে প্রায় বাদলের সাথে শারীরিক সর্ম্পকে লিপ্ত হতেন অঞ্জলী। তবে লকডাউনের কারণে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন বিমল সিং এর ভাতিজা প্রকাশ কুমার।

তিনি চাচির পরকীয়ার বিষয়টি জেনে যান। জানাজানির শঙ্কায় চাচি অঞ্জলী ও তার পরকীয়া প্রেমিক বাদল প্রকাশকে খুন করার পরিকল্পনা করেন। অঞ্জলী ভুল বুঝিয়ে এই পরিকল্পনায় যুক্ত করেন স্বামী ও বড় ছেলেকে।গত ২৮ এপ্রিল দিনগত রাতে স্ত্রীর কথামত শিক্ষা দিতে বিমল ভাতিজা প্রকাশকে এনায়েতপুর চোরখৈর ফসলি মাঠের নির্জন রাস্তার ধারে ডেকে নিয়ে যান। এসময় তার ছেলে সুবোধ সাথেই ছিলেন। সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন বাদল ও অঞ্জলী।

সেখানে পৌঁছামাত্রই বাদল রাম দা দিয়ে প্রকাশের মাথায় কোপ দেন। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন প্রকাশ। সেখানেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পুলিশ বলছে, ঘটনার পর যে যারমত বাড়ি ফেরেন। ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড হিসেবে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। মামলা দায়েরের পর ১ মে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন প্রধান আসামি বাদল। তাকে সাত দিনের রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে হত্যা রহস্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *